বান্দরবানে দুর্ঘটনায় নিহত আশরাফের লাশ হস্তান্তর, পরিবারে শোকের মাতম
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/01/22/ctg.jpg)
প্রতিদিন ভোরে কাজে যোগদানের পর রাতে বাড়ি ফেরা ছিল আশরাফের (৪০) নিয়মিত রুটিন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরেও একইভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে কাজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরপর আর ফিরে আসেননি।
বান্দরবানের থানচি উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী লিক্রে সড়কে দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ শ্রমিকের মধ্যে একজন আশরাফ আলী প্রকাশ আশু। আশরাফের নিকটাত্মীয় চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আশরাফ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গতকাল আশরাফের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর পর থেকেই তাঁর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো গ্রামেও। এরপর বান্দরবান সদর উপজেলা থেকে তাঁর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আশরাফ শান্ত প্রকৃতির ছিলেন। জিয়াউর রহমান নামের এক ঠিকাদারের অধীনে থানচির রেমাক্রি এলাকায় সড়ক নির্মাণ কাজে শ্রমিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে কাজ করে বেড়াতেন আশরাফ।
আশরাফের আত্মীয় আইনজীবী এনামুল হক জানান, প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। এনামুল জানান, আজ শুক্রবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে আশরাফের লাশ দাফন করার কথা রয়েছে।
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার নির্মাণাধীন সীমান্ত সড়কে জিপগাড়ি উল্টে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। এ ঘটনায় আরো তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, জেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী থানচি উপজেলার সদর ইউনিয়নের নির্মাণাধীন লিক্রে সীমান্ত সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শ্রমিকবোঝাই একটি জিপগাড়ি উল্টে পাহাড়ের খাদে পড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে তিনজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরো দুজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন রুমা উপজেলার বাকলাইপাড়ার বাসিন্দা পায়েল বম (২৭), সাদ্দাম (২৪), নাসির হোসেন (৩০), চট্টগ্রামের বাজালিয়ার বাসিন্দা আশরাফ আলী প্রকাশ আশু (৪০) এবং অপরজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। আহতরা হলেন জুমতম (৫০), সাইফুল ইসলাম (৩০) ও মাইন উদ্দিন (২৮)।
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের সদস্য, বিজিবি, পুলিশসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা পাঁচজনকে থানচি হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজন মারা যান। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।