মালয়েশিয়ায় অবৈধদের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধ হতে হবে

মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাইকমিশনার এ আহ্বান জানান।
শহীদুল ইসলাম বলেন, মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবৈধ বাংলাদেশিদের ভাগ্য নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আশা করছি, ভালো কিছু রেজাল্ট পাওয়া যাবে। তবে রি-হিয়ারিংয়ের জন্য এখনো পাঁচ মাস সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাদের সঙ্গে আরো বৈঠক হবে।
হাইকমিশনার বলেন, অবৈধ ব্যক্তিদের ধরপাকড় যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার নিয়মিত, স্বাভাবিক ও চলমান প্রক্রিয়া। তবে মালিকপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব শ্রমিক রি-হিয়ারিংয়ে আওতায় অংশ নিতে ইমিগ্রেশনে যাবে, তাদের কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।
এর আগে সোমবার কুয়ালালামপুরে হাইকমিশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার ওয়াহিদা আহমেদ ও শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মোস্তাফার আলী বলেন, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিরা রি-হিয়ারিং প্রক্রিয়ার আওতায় বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক এই সুযোগ গ্রহণের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ই-কার্ড প্রক্রিয়ায় এক লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন এবং দুই লাখ ৯৩ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি রি-হিয়ারিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত হয়েছে। অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক এর প্রশংসা করেন এবং উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে পর্যটক, পেশাজীবী বা ব্যবসায়িক ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক। তিনি অনুরোধ করেন, সঠিক শ্রেণির ভিসা নিয়ে যেন বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় আসে। এতে বিমানবন্দরে তাদের হয়রানির মুখোমুখি হতে হবে না।
সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদে ১৫ জন, ছয় থেকে ১২ মাস মেয়াদে চারজন এবং এক বছর মেয়াদে সাতজন সম্ভাব্য বাংলাদেশি আটক রয়েছে।
এদিকে গত এক সপ্তাহে ৩১ হাজার ৯৮৪ জনকে কন্স্যুলার সেবা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহান্তে নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কন্স্যুলার ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলেও জানান হাইকমিশনার। তিনি অভিবাসীদের প্রতারণার ফাঁদে পা না দেওয়ারও আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের ডিফেন্স উইং প্রধান এয়ার কমডোর হুমায়ূন কবির, পলিটিক্যাল মিনিস্টার রাইস হাসান সারোয়ার, পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার ফাস্ট সেক্রেটারি মো. মশিউর রহমান তালুকদার, দ্বিতীয় সচিব তাহমিনা ইয়াছমিন, শ্রম শাখার দ্বিতীয় সচিব মো. ফরিদ আহমদ।
গত ৩০ জুন থেকে পুলিশের অভিযানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই পটভূমিতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে অবৈধ বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার না করার সিদ্ধান্ত হয়।