সৌদি আরবে আবারও ধরপাকড়, ফিরলেন ২০০ বাংলাদেশি

সৌদি আরবের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরপাকড়ের শিকার হয়ে আরো ২০০ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। কাজের বৈধ অনুমোদন (আকামা) থাকা সত্ত্বেও গতকাল শুক্রবার রাতে সৌদি আরব থেকে ওই ২০০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দেশে ফেরেন ওই শ্রমিকরা। বরাবরের মতো এবারও দেশে ফেরা কর্মীদের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য সহায়তা করে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি।
শরিফুল হাসান আরো জানান, চলতি বছর ১৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছেন। চলতি মাসেই ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় ৮০৪ জনকে ব্র্যাক সহযোগিতা করেছে। এর মধ্যে একদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী এলেন গতকাল শুক্রবার।
জানা গেছে, সংসারে সচ্ছলতা আনতে মাত্র পাঁচ মাস আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন কুড়িগ্রামের আকমত আলী। কিন্তু তাঁর সে স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন। আকমতের অভিযোগ, আকামার মেয়াদ আরো ১০ মাস থাকলেও তাঁকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফেরত আসা গোপালগঞ্জের বাসিন্দা সম্রাট শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আট মাসের আকামা ছিল তাঁর। নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর পুলিশ তাঁকে আটক করে কোনো কিছুই না দেখে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
ফেরত আসা সাইফুল ইসলামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। তাঁর অভিযোগ, আকামার মেয়াদ দেখানোর পরও তাঁকে দেশে পাঠানো হয়। সাইফুল জানান, মাত্র নয় মাস আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন তিনি। আকামার মেয়াদও ছিল আরো ছয় মাস।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ জানান, আকামা তৈরির জন্য আট হাজার রিয়াল জমা দিয়েছেন কফিলকে। কিন্তু পুলিশ গ্রেপ্তারের পর কফিল কোনো দায়িত্ব নেয়নি।
এদিকে ফেরত আসা কর্মীরা সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আর কাউকে যেন তাঁদের মতো পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য করা না হয়, সে দাবিও করেন তাঁরা।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘ফেরত আসা কর্মীরা যেসব বর্ণনা দিচ্ছেন, সেগুলো মর্মান্তিক। সাধারণ ফ্রি ভিসার নামে এক নিয়োগকর্তার বদলে আরেক জায়গায় কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লে অনেক লোক ফেরত আসত। কিন্তু এবার অনেকেই বলছেন, তাদের আকামা থাকার পরও ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ করে যাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই অনেককে ফিরতে হচ্ছে, যারা খরচের টাকার কিছুই তুলতে পারেনি।’
ব্র্যাক এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকেই এ দায় নিতে হবে। পাশাপাশি নতুন করে কেউ যেন গিয়ে এমন বিপদে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’