শোলাকিয়া ময়দানে দেশের ঈদুল আজহার বড় জামাত অনুষ্ঠিত

হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ১৯৮তম পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই বৃহৎ জামাত পরিচালনা করেন কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
শোলাকিয়া মাঠের ঐতিহ্য ও রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে পরপর তিনবার বন্দুকের ফাঁকা গুলি ছুড়ে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। জামাত শুরুর ১০ মিনিট পূর্বে ৩টি, ৫ মিনিট পূর্বে ২টি ও ১ মিনিট পূর্বে ১টি বন্দুকের গুলি ছুড়ে এই ঐতিহ্যবাহী সূচনা করা হয়। জামাত ও খুতবা শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছিল। এর মধ্যে একটি ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে এবং অপরটি ভৈরব থেকে ছেড়ে আসে। জামাত শেষে ট্রেন দুটি মুসল্লিদের নিয়ে ময়মনসিংহ ও ভৈরবে পুনরায় ফিরে যায়।
হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া বলেন, কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা সংক্রান্ত ব্যস্ততার কারণে ঈদুল ফিতরের তুলনায় এই ঈদে মুসল্লিদের অংশগ্রহণ কিছুটা কম থাকে।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজেম উদ্দীন জানান, জামাত নির্বিঘ্ন করতে মুসল্লিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। এজন্য ওয়াচ টাওয়ারে পর্যবেক্ষণ, সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং ও ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরাও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করেন।
জানা যায়, মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এই ঈদগাহ মাঠ প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছর শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে মাঠটি আজকের ‘শোলাকিয়া মাঠ’ নাম ধারণ করেছে। প্রায় সাত একর আয়তনের এই মাঠে একসঙ্গে দুই লাখেরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এবং এতে ২৬৫টি কাতার রয়েছে।