প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে ম্যারাডোনার মরদেহ, শ্রদ্ধা জানাবে ফুটবলপ্রেমীরা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/11/26/rosa.jpg)
আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের জন্য বুয়েনস আইরেসে অবস্থিত প্রেসিডেন্টের কার্যালয় কাসা রোসাদায় রাখা হবে। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পৌঁছেছে ম্যারাডোনার মরদেহ। ফুটবলপ্রেমীরা যাতে এই তিন দিন ফুটবল জাদুকরকে শ্রদ্ধা জানাতে পারে, সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম বুয়েনস আইরেস টাইমসের এক প্রতিবেদনে আজ বৃহস্পতিবার এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাসা রোসাদায় ম্যারাডোনার মরদেহ রাখার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে ব্যবহার না করা ভবনের বিভিন্ন জিনিসপত্র বের করে নিয়ে আসা হয়।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/11/26/2020-10-27t230154z_1025764434_rc2brj9g306z_rtrmadp_3_argentina-kirchner-anniversary.jpg)
এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ম্যারাডোনার মরদেহ বুয়েনস আইরেসের তিগ্রেতে তাঁর বাসভবন থেকে ময়নাতদন্তের জন্য সান ফার্নান্দোর একটি মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল বুধবার মৃত্যু হয় ম্যারাডোনার। আর্জেন্টিনার তিগ্রেতে নিজ বাসায় মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
এর কিছুদিন আগে মস্তিষ্কে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছিল ম্যারাডোনার। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি গিয়েছিলেন অতিরিক্ত অ্যালকোহল আসক্তি থেকে সেরে ওঠার নিরাময় কেন্দ্রে।
এর পর বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা। সেখানেই গতকাল মারা যান তিনি।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনা প্রায় একাই আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতান। ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস প্রদেশের লানুস শহরে জন্মগ্রহণ করেন ম্যারাডোনা। দক্ষিণ প্রান্তের শহর ভিয়া ফিওরিতোতে তাঁর বেড়ে ওঠা। তিন কন্যা সন্তানের পর তিনিই ছিলেন মা-বাবার প্রথম পুত্র সন্তান।
শৈল্পিক ফুটবল দিয়ে কিশোর বয়সেই নজর কাড়েন ম্যারাডোনা। মাত্র আট বছর বয়সে যোগ দেন আর্জেন্টিনার যুব দলে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
১৯৭৭ সালে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে ডাক পান ম্যারাডোনা। এরপর দেশের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ আসরে অংশ নেন। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৮৬ সালে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। তবে ওই বিশ্বকাপে তাঁর প্রথম গোলটি ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত। দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে অবশ্য সমস্যা হয়নি। প্রায় ৬০ মিটার দূর থেকে প্রতিপক্ষের পাঁচ ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে দ্বিতীয় গোল করেন ম্যারাডোনা। ওই গোলটিকে ২০০২ সালে ফিফা ডট কমের ভোটাররা শতাব্দীর সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত করে।
১৯৯০ সালের বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন ম্যারাডোনা। তবে সেবার আর বিশ্বকাপ ছোঁয়া হয়নি। পরের বছর ইতালিতে ড্রাগ টেস্টে কোকেইনের জন্য ধরা পড়ায় ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হন তিনি। এরপর মাঠে ফিরে আর ছন্দ খুঁজে পাননি ম্যারাডোনা।
শেষ পর্যন্ত ১৯৯৭ সালে বুটজোড়া তুলে রাখেন ম্যারাডোনা। ফুটবল ক্যারিয়ার শেষে নাম লেখান কোচিংয়ে। কিন্তু ফুটবল মাতানো ম্যারাডোনা কোচ হিসেবে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। কোচিং ক্যারিয়ারেও নানা সময় বিতর্কিত হয়েছেন কিংবদন্তি এই ফুটবলার।
২০০৮ সালের নভেম্বরে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পান ম্যারাডোনা। কিন্তু ২০১০ বিশ্বকাপের পর দলের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে সেই দায়িত্বও ছাড়তে হয় বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। শেষ সময়ে আর্জেন্টিনার প্রথম বিভাগের দল হিমনাসিয়ার কোচের দায়িত্বে ছিলেন ফুটবলের এই মহাতারকা।