‘দ্য সাইলেন্ট কিলার’
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/02/04/photo-1486204409.jpg)
দলের বিপদে সব সময়ই ব্যাটটা চওড়া হয়ে যায় তাঁর। বাংলাদেশ জাতীয় দলের মিডল অর্ডারের স্তম্ভ বলা হয় তাঁকে। ব্যাট হাতে উইকেটে সামনে যেমন ঢাল হয়ে দাঁড়ান, তেমনি নিরীহ অফ ব্রেকে ঘায়েল করেন প্রতিপক্ষের মাস্টারমাইন্ড ব্যাটসম্যানদের। নেহাতই ভদ্র ও সহজ-সরল এই ক্রিকেটার ম্যাচ জিতে ঠিকমতো সেলিব্রেশনও করেন না। তবে দলে পরাজয়ে পরাজিত হন নিজের কাছে, আটকে রাখতে পারেন না অশ্রুসজল চোখ দুটিকে।
বলছি মোহাম্মদ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কথা। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাইলেন্স কিলার বলা হয় তাঁকে। ছোট থেকেই ২২ গজের ক্রিজকে দারুণ ভালোবাসেন এই তারকা ক্রিকেটার। ২০০৪ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। এর আগে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়েও মাঠ মাতিয়েছেন তিনি। ২০০৭ সালে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে মাঠে নামেন। প্রথম ম্যাচেই অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ৪২ রান। এরপর সে বছরের জুনেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তাঁর। প্রথম ম্যাচেই নিজেকে চেনান মাহমুদউল্লাহ। তামিমের ৫৪ রানের পর দ্বিতীয় সেরা স্কোরার (৩৬) ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয় তাঁর। দ্বিতীয় ইনিংসেই ৫১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনি নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়।
ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ১৩৪ বার লাল-সবুজের জার্সিতে মাঠে নেমেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৩২.৮৫ গড়ে মোট রান করেছেন ২ হাজার ৮৫৮। হাফ সেঞ্চুরি ১৬টি আর সেঞ্চুরি রয়েছে দুটি। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, তিনি দুটি সেঞ্চুরিই করেছেন ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে, তাও আবার ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ও একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ। বল হাতেও সফল এই অলরাউন্ডার। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেরা বোলিং ৪ রানে ৩ উইকেটের পাশাপাশি মোট ৭০টি উইকেটের মালিক তিনি।
সাদা জার্সিতে ৩১টি টেস্ট ম্যাচে ৩০.৫১ গড়ে এখন তাঁর মোট রান ১ হাজার ৭০৯। ১২টি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি আছে ১১৫ রানের একটি দুর্দান্ত শতকও রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরমেট টি-টোয়েন্টিতেও দুর্দান্ত এই অলরাউন্ডার। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ৫৬টি ম্যাচ। ব্যাট হাতে ১৯.৮৭ গড়ে মোট রান করেছেন ৭৭৫। যার মধ্যে আছে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি এবং ১০ বার অপরাজিত থাকার রেকর্ড।
নম্র ও স্বল্প কথার এই অলরাউন্ডার তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন ২০১১ সালের জুনে। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জান্নাতুল কাওসার মিষ্টির ঘর রাঙিয়ে এসেছে ছেলেসন্তান রাঈদ। ব্যাট হাতে উদ্ধত আর ব্যবহারে অমায়িক এই তারকার আজ জন্মদিন। ১৯৮৬ সালের আজকের দিনেই ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এই অলরাউন্ডার।