ফেঁসে যাচ্ছেন ব্লাটারও

ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার অনিয়ম-দুর্নীতি কেলেঙ্কারির জালে এবার জড়িয়ে যাচ্ছেন ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটারও। ১৯৯৮ সাল থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করা এই ফুটবল প্রশাসকের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের কর্মকর্তারা। এই অভিযোগে নাম এসেছে উয়েফার সভাপতি মিশেল প্লাতিনিরও।
গত মে মাসে প্রকাশিত হয় ফিফার দুর্নীতি কেলেঙ্কারির খবর। সে সময় জুরিখে ফিফার সদর দপ্তরে অভিযান চালিয়ে ছয় শীর্ষ ফিফা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে সুইস পুলিশ। কিছুদিন পরেই ফিফা সভাপতি নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো জয়ী হলেও প্রবল সমালোচনার মুখে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন ব্লাটার। কয়েক দিন আগে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে মহাসচিব জেরোম ভালকেকে। এবার ফিফার প্রধান ব্যক্তি ব্লাটারের বিরুদ্ধেও শুরু হচ্ছে পুলিশি তদন্ত।
সুইজারল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অপরাধমূলক অব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ২৪ সেপ্টেম্বর ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে।’
২০০৫ সালে ক্যারিবিয়ান ফুটবল ইউনিয়নের কাছে বিশ্বকাপের সম্প্রচার স্বত্ব হস্তান্তর করার ঘটনায় তদন্ত শুরু হবে ব্লাটারের বিরুদ্ধে। সে সময় ক্যারিবিয়ান ফুটবল ইউনিয়ন পরিচালনা করতেন জ্যাক ওয়ার্নার। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ওয়ার্নারকে।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্লাতিনির সঙ্গে দুই মিলিয়ন ডলারের একটা ‘অনৈতিক লেনদেন’ করেছিলেন ব্লাটার। সে সময় ফিফার সভাপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর কথা ছিল প্লাতিনির। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে ব্লাটারের কাছ থেকে দুই মিলিয়ন ডলার তাঁর কাছে আসার পর নির্বাচন থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন প্লাতিনি।
ফিফার পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, এই অর্থ প্লাতিনিকে দেওয়া হয়েছিল ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ফিফার হয়ে কিছু কাজ করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেটা এতদিন পরে কেন দেওয়া হলো, তা একটা সন্দেহজনক প্রশ্ন হিসেবেই ঝুলে আছে। সুইজারল্যান্ডের তদন্ত কর্মকর্তারা এখন জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসবেন ব্লাটার-প্লাতিনি দুজনকেই।
১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা চার মেয়াদে ফিফা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন ব্লাটার। তবে দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর কারণে ফুটবল প্রশাসক হিসেবে ক্যারিয়ার প্রায় শেষই হয়ে যাচ্ছে ৭৯ বছর বয়সী ব্লাটারের। তবে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বেশ মুশকিলের মুখে পড়তে হতে পারে প্লাতিনিকে। ২০১৬ সালের ফিফা সভাপতি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা এই ফরাসি কিংবদন্তির।