কে হবেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়?
আর মাত্র একটাই ম্যাচ বাকি। তার পরই পর্দা উঠবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। ইংল্যান্ড, না ওয়েস্ট ইন্ডিজ—কার হাতে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা উঠবে, তা জানতে অপেক্ষা আর কয়েক ঘণ্টার। শিরোপার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় কে হবেন, তা জানতেও অধীর অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। আসুন জেনে নেওয়া যাক, ষষ্ঠ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার লড়াইয়ে কে বা কারা এগিয়ে।
সবার আগে বলতে হবে বিরাট কোহলির কথা। পুরো টুর্নামেন্টে ভারতের পারফরম্যান্স ছিল কোহলিময়। গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে তেমন ভালো খেলতে পারেননি কোহলি, করেছিলেন ২৩ ও ২৪ রান। ওই দুই ম্যাচে কিউইদের কাছে হেরে গেলেও বাংলাদেশকে অতিকষ্টে হারিয়েছিল ভারত।
তবে গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল কোহলির। পাকিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৫ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ৮২ রানের দুটি চমৎকার ইনিংস খেলে ‘টিম ইন্ডিয়া’র জয়ের নায়ক তিনিই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও অপরাজিত ৮৯ রানের আরেকটি অসাধারণ ইনিংস এসেছিল কোহলির ব্যাট থেকে। তবে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তিনি দলকে জয় এনে দিতে পারেননি। তবু টুর্নামেন্ট-সেরা হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে রাখতে হবে কোহলিকে। পাঁচ ম্যাচে ১৩৬.৫০ গড়ে ২৭৩ রান নিয়ে তিনি আপাতত প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি। এমনকি গ্রুপ পর্বে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। তবু এখনো টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি রান একজন বাংলাদেশির। বাছাই পর্ব ও গ্রুপ পর্ব মিলিয়ে ছয় ম্যাচে ২৯৫ রান করে সেই আসনে অধিষ্ঠিত তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যানের সত্যিই দারুণ কেটেছে এই বিশ্বকাপ। একটি করে শতক ও অর্ধশতক করা তামিমের ব্যাট থেকেই এসেছে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি ১৪টি ছক্কা। কোহলির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারও তাঁরই। কোহলি মেরেছেন ২৯টি চার আর তামিম ২৪টি। টুর্নামেন্টে এই বাঁহাতি ওপেনারের গড় (৭৩.৭৫) আর স্ট্রাইকরেটও (১৪২.৫১) দুর্দান্ত। অসুস্থতার কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা মিস না করলে তামিমের রান আরো বাড়তই।
রান সংগ্রহে তৃতীয় স্থানে আছেন মোহাম্মদ শেহজাদ। আফগানিস্তানের এই ওপেনার সাত ম্যাচ খেলে করেছেন ২২২ রান। তবে তাঁর সেরা খেলোয়াড় হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম; বরং আপাতত চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে থাকা দুই ব্যাটসম্যানের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। কারণ, দুজনই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড দলের সদস্য। জো রুট (পাঁচ ম্যাচে ১৯৫ রান) ও জেসন রয়ের (পাঁচ ম্যাচে ১৮৩ রান) সামনে আরো রান করে সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দারুণ সুযোগ।
ব্যাটসম্যানের খেলা টি-টোয়েন্টিতে বোলাররা যেন সৎমায়ের সন্তান। বিশ্বকাপেও তেমন উজ্জ্বল বোলিং পারফরম্যান্স দেখা যায়নি। মজার ব্যাপার হলো, ফাইনালের আগ পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের তালিকার প্রথম দুজনই আফগান! মোহাম্মদ নবীর উইকেট ১২টি আর রশীদ খানের ১১টি। ১০টি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান এবং নিউজিল্যান্ডের দুই স্পিনার ইস সোধি ও মিচেল স্যান্টনার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র ২২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা বোলিংয়ের কীর্তি গড়া মুস্তাফিজুর রহমানের মোট উইকেট ৯টি। তবে একজন বোলারের হাতে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ওঠার সম্ভাবনা কমই বলা যায়।