এশিয়া কাপ
বাঁচা-মরার ম্যাচে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ

আফগানিস্তানের ক্রিকেটে পথচলা অনেকটা পরে হলেও সময়ের চেয়েও দ্রুত উন্নতি করেছে তারা। এখন সবার সঙ্গেই লড়াই করে চোখে চোখ রেখে। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের জন্য তাই কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে আজ। ব্যর্থ হলেই শেষ এশিয়া কাপের যাত্রা। এমন সমীকরণ নিয়ে রাতে আফগানদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। সরাসরি দেখা যাবে নাগরিক টিভি আর টি-স্পোর্টসে। অনলাইনে টফি আর ট্যাপম্যাড অ্যাপে।
হংকংয়ের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাজেভাবে হারে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সমীকরণ বলছে, আসরে ২ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট। দুই ম্যাচ খেলে ৪ পয়েন্ট শ্রীলঙ্কার। এক ম্যাচ খেলে ২ পয়েন্ট আফগানিস্তানের। আজ আফগানিস্তানকে হারানোর বিকল্প নেই বাংলাদেশের জন্য। তবে বাংলাদেশের কাছে হারলেও সুপার ফোরে খেলার সুযোগ থাকবে আফগানিস্তানের। তখন শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে হবে আফগানদের।
টি-টোয়েন্টির মারকাটারি খেলায় বাংলাদেশের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আফগানরা। বোলিংয়ে রশিদ খানের সঙ্গে নূর আহমেদ-গজনফাররা দুর্দান্ত করছেন। ব্যাটিংয়েও রহমানুল্লাহ গুরবাজের সঙ্গে সেদিকুল্লাহ অটলরা আস্থার প্রতিদান দিচ্ছে। সুপার ফোরের সমীকরণ মেলানোর ম্যাচে তাই দুই বিভাগেই পরীক্ষা দিতে হবে বাংলাদেশকে। সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশের অতীতও ভালো নয়।
পরিসংখ্যান বলছে, টি-টোয়েন্টিতে আফগানদের বিপক্ষে ১২ বার মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের জয় পাঁচটি, বাকি সাতটি ম্যাচেই জিতেছে রশিদ-নাবীরা। এশিয়ার মঞ্চেও পাঁচ দেখায় তিন জয় আফগানদের। ২০২২ সালে এশিয়া কাপে একমাত্র টি-টোয়েন্টির দেখায়ও ৭ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই আফগানিস্তানের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। বিপরীতে প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে রশিদ খানরা। চলতি বছরের শুরুতেও বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে আফগানরা। সেই সব আত্মবিশ্বাস নিয়েই আজ মাঠে নামবে তারা।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের চেয়ে আরও একদিকে দিয়ে রশিদ খানের দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সব মাঠই আফগানিস্তানের হাতের তালুর মতো পরিচিত। নিরাপত্তার কারণে গত কয়েক বছর ধরেই আফগানিস্তান তাদের হোম ম্যাচগুলো খেলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। যে কারণে হোম অ্যাডভান্টেজও পাবে আফগানরা।
লম্বা সময় ধরেই ছন্নছাড়া বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। সিনিয়রদের বিদায়ের পর পুরো ব্যর্থ মিডল অর্ডার। দলের হাল ধরার মতো কেউ নেই। কালে-ভদ্রে হৃদয়রা এক ভালো খেললেও ফর্মহীনতায়ই কাটে বেশিরভাগ সময়। এমন অবস্থায় আফগান স্পিনারদের বিপক্ষে লড়াই করতে হবে তাওহিদ হৃদয়-লিটন দাসদের। সেই লড়াইয়ে সফল হলেই কেবল জয়ের আশা দেখা যাবে।
তবে ব্যাটাররা সফল হবে বলেই বিশ্বাস বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদের। গতকাল ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে সুপার ফোরে খেলার। কোচিং স্টাফ ও ম্যানেজমেন্ট—সবাই সেই বিশ্বাসটাই খেলোয়াড়দের মধ্যে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। কোচ হিসেবে আমরাও মনে করি, যোগ্য দল হিসেবেই সুপার ফোরে ওঠা সম্ভব।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্কোয়াডে একটি পরিবর্তন এনেছিল বাংলাদেশ। পেসার তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি শরিফুল। তাই এই ম্যাচ দিয়ে আবারও একাদশে ফিরতে পারেন তাসকিন। এছাড়াও তাওহিদ হৃদয়ের পরিবর্তে একাদশে দেখা যেতে পারে সাইফ হাসানকে।
সব পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশকে সমীহ করেই মাঠে নামবে আফগানিস্তান। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে দলটির প্রধান কোচ জনাথন ট্রট সেটিই বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সত্যিকারের ম্যাচ জেতানোর মতো খেলোয়াড় আছে। আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিই হতে হবে।’