কেমন হবে করোনাপরবর্তী বিমানযাত্রার অভিজ্ঞতা?

করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বে অনেক দিন ধরেই সংকটের মুখে রয়েছে বিমান চলাচল ব্যবস্থা। কবে এ ভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে, এর কোনো উত্তর জানা নেই। এর ফলে কবে থেকে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হবে, এরও হদিস মিলছে না। তবে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হলেও বিমানযাত্রায় যাত্রীদের কিছু ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি যে পড়তেই হবে, তা বলা যায়। অন্তত আগের মতো স্বাভাবিকতা এত সহজেই মিলবে না। এ ছাড়া কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় তো পড়তেই হবে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বিমানবন্দরগুলোতে সব যাত্রীকে ফেস মাস্ক ও গ্লাভস পরা অবস্থায় দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া সব জায়গায় জীবাণুনাশক ছিটানোসহ একে অন্যের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হতে পারে। আর এ জন্য মাঠে বিভিন্ন কর্মীকে দেখা যেতে পারে।
এ ছাড়া শিল্প কর্মকর্তাদের ধারণা, অতিরিক্ত সতর্কতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য ভ্রমণের সময়সূচি দীর্ঘ হতে পারে।
এসব ব্যাপারে দুবাই বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পল গ্রিফিথস অনেকটা মজার ছলেই বলেন, ‘বিমানবন্দরে যাওয়ার পর পুরো ভ্রমণ অভিজ্ঞতা ওপেন-হার্ট সার্জারির মতো উপভোগ্য হবে।’
এদিকে বিভিন্ন দেশের সরকার বিমান চলাচলের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও কীভাবে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হবে, তার কোনো সঠিক সমাধান বের করতে পারেনি।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরের সিইও জন হল্যান্ড বলেছেন, ‘জাম্বোজেটগুলোতে যদি ৪০০ জন করে যাত্রী নেওয়া হয় এবং তাদের মধ্যে দুই মিটার করেও দূরত্ব বেঁধে দেওয়া হয়, তাহলে তা প্রায় এক কিলোমিটারের একটি সারি হয়ে যাবে।’
এদিকে, বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের মধ্যে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর তাদের যাত্রীদের মধ্যে অন্তত দেড় মিটার দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে। সামাজিক দূরত্বের জন্য বিমানবন্দরের বিভিন্ন জায়গায় নকশা আঁকা হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য শতাধিক পোস্টার ও ডিজিটাল ডিসপ্লে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ মিনিট পরপর বিভিন্ন ভাষায় সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরের কর্মকর্তা ম্যাথিয়াস বলেছেন, ‘আমরা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে ভালো রকমের ব্যবস্থা নিয়েছি।’
অন্যদিকে ফ্রান্সের চার্লস ডি গল বিমানবন্দরে বিকল্প আসনগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা প্রতিরাতে টার্মিনালে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছে। এ ছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে লিফটে নকশা করা হয়েছে।
ওই বিমানবন্দরে প্রতি সেকেন্ড ১৬ জনের শরীরের তাপমাত্রা মাপতে পারে এমন একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে। সেখানে কারো তাপমাত্রা বেশি হলেই তাকে আলাদা করে কোভিড-১৯-এর পরীক্ষা করানো হচ্ছে।
দুবাই বিমানবন্দর প্রধান গ্রিফিথস বলছেন, ‘আমরা কখনোই এমন একটি সংকটের মুখে পড়িনি। আমরা একটি দানবের মুখোমুখি হয়েছি।’