জাপান
বইপোকাদের স্বর্গরাজ্য ‘বুক অ্যান্ড বেড টোকিও’
বই পড়তে পড়তে টেবিলে মাথা রেখে অথবা বিছানায় ঘুমিয়ে যাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা বইপ্রেমীদের সঙ্গে প্রায়ই ঘটে থাকে। কিন্তু বই পড়তে পড়তে বইয়ের তাকে বা শেলফে ঘুমিয়ে গিয়েছেন এমন অভিজ্ঞতা কি কখনো হয়েছে? উত্তরটা যদি না হয়, তাহলে আপনার জন্য রিডার্স ডাইজেস্ট জানাচ্ছে এমন একটি হোটেলের কথা, যেখানে বই পড়তে পড়তে চোখ বুজে এলে বইয়ের তাক বা শেলফেই ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন আপনি।
আর অদ্ভুত এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হলে আপনাকে যেতে হবে জাপানের রাজধানী টোকিওর ইকিবুকুরো শহরে। সেখানকার ‘বুক অ্যান্ড বেড টোকিও’ হোটেলের বইয়ের তাকের সঙ্গে সংযুক্ত বিছানায় রয়েছে আরাম করে বই পড়ার ব্যবস্থা। হাজার তিনেক বইয়ের সংগ্রহ থেকে বেছে নিয়ে পড়তে শুরু করতে পারবেন অতিথিরা। টোকিও ও কিয়োটোতে সব মিলিয়ে এ রকম আরো তিনটি হোটেল রয়েছে, যেখানে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার।
হোটেলটিতে রাখা বেশিরভাগ বই-ই ইংরেজি ভাষার। এ ছাড়া জাপানে ঘুরে বেড়ানোর দিকনির্দেশনামূলক বইও পাওয়া যাবে হোটেলে। দিকনির্দেশনামূলক বইগুলোর নাম অবশ্য জাপানি ভাষায় লেখা। ‘বুক অ্যান্ড বেড টোকিও’ হোটেলটির ওয়েবসাইট বলছে, ‘আপনার রুচি যেমনই হোক না কেন, অন্তত একদিন হলেও আপনার বই দিবস উদযাপন করা উচিত।’
শান্তিতে ঘুমানোর জন্য ‘বুক অ্যান্ড বেড টোকিও’ হোটেলটির বইয়ের তাকে বেশ খানিকটা জায়গা রয়েছে। জায়গার তারতম্য নির্ভর করবে আপনার পছন্দের ওপর। ছোট-বড় সব ধরনের কামরার ব্যবস্থাই রয়েছে বইয়ের তাকে। ছোট কামরায় একা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই বই পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে যদি সঙ্গীসমেত বই পড়ার আনন্দ পেতে চান, তাহলে বড় কামরা নির্বাচন করতে হবে আপনাকে। একটি রাতের জন্য ছোট কামরায় থাকা এবং বই পড়ার জন্য আপনাকে গুনতে হবে ৩১ ডলার। বড় কামরার ক্ষেত্রে সেটা গিয়ে দাঁড়াবে ৬০ মার্কিন ডলারে।
প্রতিটি কামরায় বই পড়ার জন্য রয়েছে উজ্জ্বল এবং নরম আলোর ব্যবস্থা। বিছানায় শোয়ামাত্র আপনি দেখতে পাবেন কয়েক ডজন বই কামরার সিলিং থেকে ঝুলছে। আর যাঁরা পুরোনো বা নিত্যনতুন সাময়িকীর ভক্ত, তাঁদের জন্য গোটা একটা দেয়াল উৎসর্গ করেছে ‘বুক অ্যান্ড বেড টোকিও’ হোটেলটি। দেয়ালজুড়ে ঝোলানো রয়েছে নানা ধরনের বিভিন্ন বিষয়ের সাময়িকী। ইচ্ছে করলেই যেকোনো সাময়িকীর দু-একটা পাতা উল্টিয়ে দেখতে পারবেন আপনি।
‘বুক অ্যান্ড বেড টোকিও’ হোটেলটির ওয়েবসাইট নিজেদের দাবি করছে ‘বইপোকাদের স্বর্গরাজ্য’ হিসেবে। তাদের দাবি কতটা যৌক্তিক, তা জানতে হলে আপনাকেই একবার ঘুরে আসতে হবে বইপোকাদের স্বর্গ থেকে। প্রশ্ন হলো, আপনি কি বইপোকা?