অযোধ্যা মামলার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের

অযোধ্যার বিতর্কিত রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রায় পুনর্বিবেচনা করতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে প্রভাবশালী মুসলিম সংগঠন জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ।
ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে গতকাল সোমবার সংগঠনটির আবেদনটি জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। আবেদনে জমিয়ত উলেমার প্রধান আরশাদ মাদানি বলেছেন, ভারতের বেশিরভাগ মুসলমান ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদের জমি রামমন্দির নির্মাণে দেওয়ার রায়ে নাখোশ। চলতি বছরের নভেম্বরের শুরুতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রায়ে বিতর্কিত পৌনে তিন একরের জমিটিতে রামমন্দির নির্মাণ এবং অযোধ্যার অন্য কোথাও মসজিদ নির্মাণে মুসলমানদের পাঁচ একর জমি দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন। মামলার অন্যতম বিবাদী সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ওই রায় মেনে নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হবে না বলে জানালেও জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ ও অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড সে পথে না হাঁটার ঘোষণা দেয়।
এ প্রসঙ্গে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আমরা চাইছি এর সুবিচার হোক। আমরা আদালতের রায়ে খুশি নই, এটা খুব পরিষ্কার কথা।’ বাবরি মসজিদের তথ্যভিত্তিক কোনো বিচার হয়নি, আবেগের ভিত্তিতে রায় হয়েছে বলেও মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী মন্তব্য করেন। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এ খবর জানিয়েছে।
রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের আদেশ স্থগিতের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে আদেশ দিক, যাতে মন্দির নির্মাণের জন্য ট্রাস্ট না তৈরি করা হয়।
জমিয়তের শীর্ষ নেতা আরশাদ মাদানি বলেন, ‘আদালতই আমাদের অধিকার দিয়েছে মামলা করার, সে জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। অযোধ্যা মামলায় বিতর্কের মূল বিষয়বস্তু ছিল মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ তৈরি হয়েছিল কি না। শীর্ষ আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছেন, মন্দির ধ্বংস করেই যে মসজিদ তৈরি হয়েছিল, এমন কোনো প্রমাণ নেই। সুতরাং মুসলিমদের অধিকার প্রমাণিত। অথচ চূড়ান্ত রায় এর বিপরীতধর্মী। আমরা রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছি, কারণ রায় বোধগম্য হয়নি।’
এদিকে, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের পক্ষ থেকেও রিভিউ পিটিশনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হবে।