এনআরসির বিরুদ্ধে আরেকটি স্বাধীনতার আন্দোলন হবে : মমতা

ভারতের নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ইস্যুতে আরো একটি স্বাধীনতার আন্দোলন হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল শুক্রবার কলকাতায় সংহতি দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এ সময় মমতা বলেন, ‘স্বাধীনতার ৭২ বছর পর হঠাৎ নাগরিকত্ব নির্ধারণ করতে চাইলে এর বিরুদ্ধে লড়াই হবে। বাংলা রুখে দাঁড়াবে। আরেকটা স্বাধীনতার আন্দোলন হবে। আমাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিলে আমরা কেউ ছাড়ব না। কেউ ছেড়ে কথা বলব না। আমার অধিকার কেড়ে নিতে দিচ্ছি না, দেব না।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এনআরসি আমি মানি না। নাগরিকপঞ্জিতে যদি জানা যায় নাগরিকরা ভুয়া, তাহলে তো এদের ভোটে জেতা সরকারও ভুয়া।’
এরই মধ্যে নতুন নাগরিকত্ব বিল বাতিল করার দাবিতে আসামে বিক্ষোভ করেছে শত শত মানুষ।
এদিকে অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতে নাগরিকত্ব দিতে গত বুধবার নতুন একটি বিলে অনুমোদন দেয় নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রিসভা। প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব অমুসলিমরা ধর্মীয় নিপীড়নে শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দিতেই এই বিল।
তবে মুসলিম শরণার্থীদের বিষয়ে কোনো দিক নির্দেশনা না থাকায় বিলটির বিপক্ষে সরব হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে রাজনীতিকরাও। অনুমোদনের জন্য আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টে তুলতে যাওয়া এ নাগরিকত্ব বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে আসামের গুহাটিতে। শুক্রবার গুহাটিতে প্ল্যাকার্ড হাতে সহস্রাধিক মানুষের এই বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীরাও।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ভারতের সমাজবিজ্ঞানী হিরেন গুহানি বলেন, ‘আসামের মানুষের স্বার্থ, আবেগ-অনুভূতি কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সরকারের নাগরিক সংশোধনী বিল সিদ্ধান্ত খুবই হতাশার।’
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টির নেতা রাহুল গান্ধী গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘মন্ত্রীসভায় অনুমোদন পাওয়া বিলটি সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভাজন তৈরি করবে।’ রাহুলের অভিযোগ, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের ভারতের নাগরিকত্ব দিয়ে মুসলিম তাড়াবার পথ তৈরি করছে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার।