তালেবানের নেতৃত্বে কারা, এখন কে কোথায় আছেন?

তালেবানের বেশির ভাগ নেতা কাতারের রাজধানী দোহায় ছিলেন। সেখানে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর সেনা প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করার পর ফিরতে শুরু করেছেন তাঁরা। কান্দাহারে গতকাল মঙ্গলবার ফিরেছেন তালেবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং সশস্ত্র সংগঠনটির রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ কথা জানানো হয়।
তবে, তালেবানের নতুন সরকারে কারা থাকছেন, তার কোনো ঘোষণা এখনও আসেনি।
জ্যেষ্ঠ নেতারা দলে যেসব পদ ও কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তার একটি চিত্র প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

হিবাতুল্লাহ আকুন্দজাদা
তালেবান নেতা আখতার মানসুর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর ২০১৬ সালের মে মাস থেকে হিবাতুল্লাহ আকুন্দজাদা তালেবানের সুপ্রিম কমান্ডারের দায়িত্বে রয়েছেন।
আশির দশকে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, সামরিক নেতার তুলনায় একজন ধর্মীয় নেতা হিসেবে তাঁর পরিচিতি বেশি। তাঁর বয়স ৬০ বছর বলে ধারণা করা হয় এবং জীবনের বেশির ভাগ সময় তিনি আফগানিস্তানে কাটিয়েছেন।
দলের সুপ্রিম লিডার হিসেবে রাজনৈতিক, সামরিক ও ধর্মীয় বিষয়ের প্রধান আকুন্দজাদা। ধারণা করা হয়—তিনি পাকিস্তানের কোয়েটায় অবস্থিত কথিত তালেবান নেতাদের পরামর্শক পরিষদ ‘কোয়েটা শুরা’র সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তাঁকে অবশ্য এখনও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার আখুন্দ
তালেবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আবদুল ঘানি বারাদার আখুন্দ এখন দলের রাজনৈতিক শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১০ সালে তাঁকে একটি অভিযানে গ্রেপ্তার করা হলেও, আট বছর পর শান্তি আলোচনার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। ২০২০ সালে প্রথম তালেবান নেতা হিসেবে তিনি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন।
গতকাল মঙ্গলবার তিনি কাতার থেকে আফগানিস্তানে ফিরে এসেছেন।
মোহাম্মদ ইয়াকুব
তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা নেতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াকুব। তাঁর বয়স প্রায় ৩০ বছর এবং তিনি দলের সামরিক শাখার প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন।
২০১৬ সালে আখতার মানসুরের মৃত্যুর পর তালেবানের একটি অংশ তাঁকে দলের সুপ্রিম লিডার বানাতে চেয়েছিলেন। তবে, অন্যরা তাঁকে বয়স কম ও অনভিজ্ঞ বলে মনে করেন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মোহাম্মদ ইয়াকুব আফগানিস্তানে রয়েছেন।
সিরাজুদ্দিন হাক্কানি
তালেবানের অন্যতম শীর্ষ নেতাদের একজন সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। তাঁর পিতা জালালুদ্দিন হাক্কানির মৃত্যুর পর তিনি হাক্কানি নেটওয়ার্কের নতুন নেতা হন। আফগান ও পশ্চিমা বাহিনীর ওপর ভয়াবহ সব হামলার জন্য এই দলকে দায়ী করা হয়।
এই এলাকার সবচেয়ে ভয়াবহ ও শক্তিশালী দলগুলোর একটি হাক্কানি নেটওয়ার্ক। অনেকে মনে করেন, আফগানিস্তানের আল-কায়েদার চেয়ে এই বাহিনী বেশি শক্তিশালী।
তিনিও আফগানিস্তানে রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।
মোল্লা আবদুল হাকিম
তালেবানের বিচার ব্যবস্থা তদারক করেন মোল্লা আবদুল হাকিম। কাতারের দোহায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় নেতৃত্ব দেন মোল্লা আবদুল হাকিম।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ
তালেবানের মুখপাত্র হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম প্রকাশ্যে জনসমক্ষে এসে বক্তব্য দিলেন। এর আগে এই নেতারা বক্তব্য ও বিবৃতি পেতো সংবাদ মাধ্যম।