তেলেঙ্গানায় চিকিৎসক ধর্ষণকারীদের জনসমক্ষে পেটানো উচিত : জয়া
এক পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ভারতজুড়ে। দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ ও তারকা ব্যক্তিত্বরা। প্রবল চাপের মুখে এ মামলা ফাস্ট-ট্র্যাক আদালতে বিচার হবে বলে গতকাল রোববার ঘোষণা করেছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও।
এদিকে আজ সোমবার পার্লামেন্টে রাজ্যসভার আইনপ্রণেতা জয়া বচ্চন বলেছেন, ওই নারী চিকিৎসককের ধর্ষণকারী ও খুনিদের জনসমক্ষে এনে পেটানো উচিত। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই এ খবর জানিয়েছে।
পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষে দেওয়া বক্তব্যে জয়া বলেন, ‘জনগণ এখন সরকারের কাছ থেকে যথাযথ ও সুনির্দিষ্ট জবাব চায়। (ধর্ষণ ও হত্যায় অভিযুক্ত) এ ধরনের ব্যক্তিদের জনগণের সামনে এনে পেটানো উচিত।’
‘এ ধরনের অপরাধের পর (পার্লামেন্টে) দাঁড়িয়ে বহুবার কথা বলেছি। আমি মনে করি এটাই সময়... নির্ভয়া কিংবা কাঠুয়া অথবা তেলেঙ্গানায় যা ঘটেছে... আমার মনে হয় জনগণ এখন সরকারের কাছ থেকে যথাযথ ও সুনির্দিষ্ট জবাব চায়,’ বলেন জয়া।
‘সরকার কী করেছে? তারা কীভাবে বিষয়গুলো মোকাবিলা করেছে? ভুক্তভোগীদের কীভাবে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়া হয়েছে? আমি কারো নাম ধরে বলছি না... কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি কি উঠে আসছে না?... কেন এ ঘটনা ঠেকানো গেল না?,’ যোগ করেন জয়া বচ্চন।
এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আরো দাবি করেন, এমন গা শিউরে ওঠা অপরাধের শিকার হওয়া নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে যারা ব্যর্থ হয়েছে, তাদের ‘নাম প্রকাশ করা ও লজ্জা দেওয়া’ উচিত।
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে গত সপ্তাহে স্কুটির চাকা পাংচারের পর তা ঠিক করার নাম করে গণধর্ষণ করা হয় পশু চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা রেড্ডিকে। পরে হত্যার পর তাঁকে তাঁরই স্কুটির জ্বালানি দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গত শুক্রবার এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় চার যুবককে।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় টোল প্লাজায় প্রিয়াঙ্কাকে স্কুটি নিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে ছক কষে অভিযুক্ত যুবকরা। পরে প্রিয়াঙ্কার অনুপস্থিতিতে স্কুটির টায়ার পাংচার করে দেয় তারা। পরে প্রিয়াঙ্কা ফিরে এলে স্কুটি ঠিক করে দেওয়ার নাম করে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় ট্রাকচালক আরিফ ও তার সহকারী শিবা। এর এক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করে ওই যুবকরা। জানা গেছে, পানীয়তে মদ মিশিয়ে জোর করে তাঁকে পান করানো হয়। পরে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। দেহ পোড়াতে তাঁর স্কুটির জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে।
প্রিয়াঙ্কার মায়ের দাবি, বিপদের আভাস পেয়ে প্রিয়াঙ্কার ছোট বোন তোন্ডাপাল্লি টোল প্লাজায় পৌঁছে খোঁজ করেছিলেন। না পেয়ে মা-বাবাকে জানালে তাঁরা থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। প্রিয়াঙ্কার মা বলেন, ‘আমার ছোট মেয়ে প্রথমে আরজিআইএ পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু আরজিআইএ পুলিশ বলে, সেটি শামসাবাদ থানার ঘটনা।’ প্রিয়াঙ্কার বোনের অভিযোগ, এক থানা থেকে আরেক থানায় ঘোরাঘুরি করতেই দুই থেকে তিন ঘণ্টা চলে যায়। যখন তল্লাশি শুরু হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। যদিও সাইবরাবাদের পুলিশ কমিশনার সজ্জানারের দাবি, আরজিআইএতে অভিযোগ জানাতেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে মিছিল হয়েছে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যেও। শাদনগর বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, অভিযুক্তদের হয়ে মামলা লড়বে না তারা। এদিকে টুইটারে বিভিন্ন তারকাও প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন।