নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ঘিরে উত্তাল আসাম

ভারতের নাগরিকত্ব বিল ঘিরে ক্ষোভে জ্বলছে আসাম রাজ্য। এর আগে নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রভাবে ক্ষোভে ছিলেন আসাম রাজ্যের বাসিন্দারা। এবার নাগরিকত্ব বিলের ফলে এই ক্ষোভ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই আসামে শুরু হয়েছে ১১ ঘণ্টার ‘বনধ’। সকালে রাজ্যের ডিব্রুগড় ও জোড়হাটে অসংখ্য মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে।
নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের ডাকা এই বনধে গুয়াহাটির বহু জায়গায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় বাতিল করা হয়েছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা।
রাজ্যের বাসিন্দাদের আশঙ্কা, নাগরিকত্ব বিলের আওতায় যে আইনের কথা বলা হয়েছে, তাতে আসামে ঢুকে যেতে পারেন বহিরাগত উদ্বাস্তুরা। আর বহিরাগত উদ্বাস্তুরা আসামে এলে এখানকার বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকায় টান পড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আসামসহ উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মানুষদের বিশেষ সংস্কৃতি।
এই বনধকে সমর্থন জানিয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই, ডিওয়াইএফআইসহ একাধিক সংগঠন। বনধ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় রাজ্যের লখিমপুর ও শোনিতপুর জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। খোলা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন।
রাজ্যের ১৬টি ছাত্র সংগঠন এই আইনের বিরোধিতায় আগে থেকেই পথে নেমেছিল, চলছিল বিক্ষোভ। বিভিন্ন জায়গায় ডাকা হয়েছিল বনধ। এবার সংসদে বিলটি পাস হতেই আসামজুড়ে ১১ ঘণ্টার বনধের ডাক দেয় নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন।
এ ঘটনায় নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মিজোরাম, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মণিপুরকে। প্রতিটি রাজ্যেই বাড়ানো হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা।
এদিকে এই বিলের প্রতিবাদে আসাম ও অরুণাচলসহ উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্যে আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো। যাদের মধ্যে রয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর আইইউডিএফ, অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, খাসি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন।
এই বিলের প্রতিবাদে মণিপুর রাজ্যেও বিক্ষোভ চলছে। মণিপুর পিপলস অ্যাগেইনস্ট ক্যাব নামে একটি সংগঠন এরই মধ্যে এই বিল পাসের প্রতিবাদ জানিয়েছে।