বিনা বিচারে আড়াই বছর জেল খেটে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক
বিনা বিচারে দীর্ঘ আড়াই বছর জেল খাটার পর মুক্তি পেয়েছেন ভারতের মুসলিম সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান। জামিন পাওয়ার এক মাস পর তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থ পাচার মামলায় এই সাংবাদিককে মাসখানেক আগে জামিন দেয় প্রয়াগরাজের (সাবেক এলাহাবাদ) একটি আদালত। খবর আল-জাজিরার।
কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের অর্থ সহায়তা ছাড়াও বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। জঙ্গিদের অর্থ সহায়তা মামলায় গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সিদ্দিককে জামিন দেয়।
জেল থেকে মুক্তির পর ৪৩ বছর বয়সী এই সাংবাদিক বলেন, আড়াই বছর পর জেলের বাইরে চলতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি নির্দোষ, বিষয়টি প্রমাণ করতে পারবো বলে আশাবাদী।
সিদ্দিকের মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন সিপেজি। তাদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে আনীত সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হোক।
২০২২ সালের অক্টোবরে একটি ধর্ষণ মামলার জন্য উত্তর প্রদেশে যান সিদ্দিক। ওই সময়েই তাকে ও তার গাড়ি চালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে একটি মুসলিম সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে সহিংসতা উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
সিদ্দিকের গাড়িচালক মোহাম্মদ আলম গত মাসেই জামিন পান। তবে এখনও গ্রেপ্তারকৃত দুজন কারাগারে রয়েছেন।
নিজের নির্দোষের কথা আগে থেকেই জানিয়ে আসছেন সিদ্দিক। কাজের উদ্দেশ্যেই নিজের জেলা কেরালা থেকে উত্তর প্রদেশে গিয়েছিলেন বলে দাবি এই সাংবাদিকের। তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশের হাথরাস শহরে দলিত সম্প্রদায়ের এক মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল। সেই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। এতে ভুল কোথায়? আমার কাছে দুটি কলম ও একটি ডায়েরি ছিল।
পরিবারের দুর্দশার কথা জানিয়ে এই সাংবাদিক আরও বলেন, আমি জেলে যাওয়ার পর থেকেই আমার স্ত্রী এ তিন সন্তান খুব কষ্টে দিন কাটিয়েছে। যারা আমার মুক্তির বিষয়ে আওয়াজ তুলেছিল তাদের ধন্যবাদ।
আল-জাজিরা বলছে, ২০১৪ সালে কট্টরপন্থী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ব্যাপক অবনতি হয়েছে। সরকার বিরোধী প্রতিবেদনের জন্য প্রায়শ সাংবাদিকদের জেল খাটতে হচ্ছে।