ভারতের সুন্দরবনে বড় অস্ত্র কারখানার হদিস, আটক ২

ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার অন্তর্ভুক্ত সুন্দরবনে বড় ধরনের অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ঢোলাহাট থানার আমিরপুর গ্রামের একটি বাড়িতে গোপনে চলছিল ওই অস্ত্র তৈরির কারখানা।
গতকাল বুধবার ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রভাণ্ডারের খোঁজ পায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অস্ত্র কারখানা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও পাওয়া গেছে বোমা তৈরির কাঁচামাল। অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ সবকিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বেআইনি অস্ত্রের দুই কারবারিকে। আটকদের একজন ওই বাড়ির মালিক জাহির মির এবং অন্যজন মথুরাপুর থানার হরিণবাটির বাসিন্দা এরাদ আলি লস্কর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঢোলাহাট থানা থেকে আট কিলোমিটার দূরে ওই অস্ত্র কারখানায় কাজ চললেও স্থানীয় গ্রামবাসী ও পুলিশ কিছু টের পায়নি।
জানা গেছে, কয়েক দিন আগে ঢোলাহাট থানার আমিরপুর গ্রামে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সংঘর্ষে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজিও হয়েছিল। ঘটনার তদন্তে নামে ঢোলাহাট থানার পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আমিরপুর গ্রামের এক বাড়িতে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা রয়েছে। সেখান থেকেই সংঘর্ষে ব্যবহৃত বোমাগুলো কেনা হয়েছিল।
এ ছাড়া ঢোলাহাটের ওই বেআইনি অস্ত্র কারখানা থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা-গুলি সরবরাহ করা হতো বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এরপরই ঢোলাহাট থানা পুলিশের সঙ্গে সুন্দরবন জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই অস্ত্র কারখানার হদিস পায়।
পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জাহির মির নামের এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে ফেলে। ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বড় ধরনের অস্ত্রভাণ্ডারের খোঁজ পায় পুলিশ। আটক করা হয় দুই অস্ত্র কারবারিকে।
সুন্দরবন জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান, ঢোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), মন্দিরবাজারের উপপুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি দল গতকাল বুধবার অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে। সেখান থেকে তিনটি বড় রাইফেল, একটি ছোট রিভলবার, দুটি ওভার শোল্ডার (কাঁধে রেখে ছোড়া যায় এমন) লঞ্চার, তিন হাজারের বেশি বোমা, বোমা তৈরির কাঁচামাল, গান পাউডার, ওয়েল্ডিং মেশিন এবং আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির আরো নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আটকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত দুজনকে গতকাল বুধবার আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই অস্ত্র কারখানার সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত, তা জানতে আটক দুই অস্ত্র কারবারিকে জেরা করছে পুলিশ।