‘যুক্তি ছিল মুসলিমদের পক্ষে, অথচ রায় গেল হিন্দুদের পক্ষে’

ভারতের অযোধ্যার বিতর্কিত রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রায়ে যুক্তি ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষে। কিন্তু অযোধ্যায় মন্দির তৈরি নিয়ে আদেশ গেছে হিন্দুদের পক্ষে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন ভারতের সাবেক বিচারপতি এ কে গাঙ্গুলী। অযোধ্যা মামলার রায় নিয়ে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে গতকাল সোমবার এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই এ কে গাঙ্গুলী এ কথা বলেন বলে জানা গেছে।
ওই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নীরা চান্দ্রোকে। এদিন অযোধ্যা মামলা নিয়ে বিচারপতির রায়ের অংশ পড়ে শোনান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে গাঙ্গুলী।
সাবেক বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে অবাস্তবভাবে বলা হয়েছে, ইসলামে মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং নামাজ খোলা জায়গায় পড়া যায়। একজন উপাসকের বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন এ কে গাঙ্গুলী। অযোধ্যা নিয়ে রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্ট সংখ্যালঘু মত গ্রহণ করেননি বলেও মন্তব্য করেছেন সাবেক এই বিচারপতি।
এ কে গাঙ্গুলী অযোধ্যা রায় প্রসঙ্গে আরো বলেন, মন্দির ধ্বংসের পরে মসজিদ তৈরি হয়নি। অযোধ্যায় যে অবকাঠামো হিন্দুরা নিজেদের বলে দাবি করছে, সেটা মসজিদ; মুসলিমরা কখনই তা পরিত্যাগ করেনি। আবার হিন্দুরা অবৈধভাবে তা দখল করে রেখেছিল। রায়ের এই অংশ গেছে মুসলিমদের পক্ষে।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার নীরা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে, সরকার এমন একটি ধারণা তৈরি করতে চেয়েছে। রায়ের মধ্য দিয়ে এ ইস্যুর সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু আসলে তা হয়নি। নীরা চান্দ্রোকে আরো বলেন, মন্দির তৈরির জন্য কমিটি গঠনে সরকারের পক্ষ থেকেও যেন একটা তাড়া ছিল। তিনি আরো প্রশ্ন করেন, ‘যদি বাবরি মসজিদ তৈরির জন্য মন্দির ধ্বংস করেই থাকেন, তাহলে কি আমাদেরও সেই কাজ আরো একবার করতে হবে?’
অন্যদিকে আইনজীবী হেগড়ে বলেন, ভারতে এমন এক আদালত দরকার, যেখানে অনুগ্রহ কিংবা পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই রায় দেওয়া হবে।