লাঠিচার্জ থেকে বন্ধুকে বাঁচাতে মানবঢাল হলেন বান্ধবীরা, ভিডিও ভাইরাল

দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী ভারতীয় পুলিশ সদস্যদের লাঠিচার্জ থেকে বন্ধুকে বাঁচাতে ঘিরে ধরে রাখার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শাহিন আবদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে একটি বাড়ি থেকে বের করে এনে বেধড়ক পেটাতে থাকে পুলিশ। পুলিশের মারের হাত থেকে শাহিনকে বাঁচাতে কয়েকজন বান্ধবী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেদের শরীর দিয়ে ঢাল তৈরি করেন। নির্ভয়ে বন্ধুদের এগিয়ে আসার এমন দৃশ্য দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বন্ধুত্বের স্তুতি করছেন।
শাহিনের বান্ধবী লাদিদা ফারজানা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের বন্ধুকে রক্ষা করতে চেয়েছিলাম।’ আরবি বিভাগের স্নাতকের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘রোববার বিকেল ৫টার দিকে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে আমরা একটি বাড়ির গ্যারেজে লুকাই, আমরা নয়জন ছিলাম। আটজন মেয়ে আর একজন ছেলে। পুলিশ তাঁকে (শাহিনকে) ধরে নিয়ে বের করে পেটাতে শুরু করলে আমরা তা ঠেকাতে যাই।’
দিল্লিতে এদিনের বিক্ষোভ থেকে সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের অন্তত ৫০ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লাদিদা বলেন, ‘নাগরিকত্ব আইন শুধু আমাদের নয়, পুরো ভারতের মুসলিমদের বিপদে ফেলবে। আর ভিডিওটি আমাদের সম্পর্কে না, এটি আসলে ভারতের গোটা মুসলিম সমাজের।’
এক মিনিটেরও কম সময়ের ভিডিও ফুটেজ ভারতকে দেখিয়েছে, বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-সিএবি পাসের ফলে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে পুলিশ কেমন আচরণ করছে। আইনটিকে মুসলিমবিদ্বেষী আখ্যা দিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন অনেক মানুষ বিদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমাবে।
কোনো সংখ্যালঘু, অর্থাৎ অমুসলিম ব্যক্তি পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে নির্যাতন-নিগ্রহের শিকার হয়ে ভারতে এলে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে আইনটিতে। ফলে এসব দেশ থেকে বহু হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মের লোকজন ভারতের দিকে ধাবিত হবে।
ভারতীয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-সিএবি দেশটির বিধানসভা ও রাজ্যসভায় পাসের পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে আইনে পরিণত হওয়ার পরপরই ভারতজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।