হাতে-পায়ে ৩২ আঙুল, ‘ডাইনি’ বলে ডাকে সমাজ

দুই হাতে ১২টি ও দুই পায়ে ২০টি আঙুল নিয়ে জন্মেছেন ভারতের ওডিশা রাজ্যের গঞ্জাম জেলার কুরাম নায়েক। আর এটাই হয়ে গেছে তাঁর অপরাধ। এ অপরাধে একঘরে হয়ে রয়েছেন ৬৩ বছর বয়সী এই নারী। সমাজের কাছে তিনি ‘ডাইনি’। এ নামে ডেকে তাঁকে অবহেলা করেন এলাকার মানুষ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিনের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম কুরাম নায়েকের। অর্থের অভাবে তাঁর এই শারীরিক অবস্থার চিকিৎসা করাতে পারেননি।
শারীরিক অবস্থার জন্য পুরো সমাজে একঘরে হয়ে পড়েছেন কুরাম। প্রতিবেশীরা কেউই তাঁর সঙ্গে মেশেন না। দুঃসহ একাকী জীবন কাটাতে কাটাতে তাঁর সময় চলে যায়।

একদিকে প্রতিবেশীদের অবহেলা, অন্যদিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে দেখতে আসে মানুষ। আর এতে অস্বস্তিতে পড়ে যান কুরাম। এ জন্য নিজেকেই বরং আরো বেশি আড়াল করে রেখেছেন তিনি। নিজেকে বন্দি করে রাখেন ঘরের ভেতর।
গঞ্জাম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে থাকেন কুরাম নায়েক। তাঁর এক প্রতিবেশী বলেন, ‘আমরা খুবই ছোট গ্রামে থাকি। এখানকার মানুষ অনেক কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তা ছাড়া তাঁদের পরিবারের যা আর্থিক অবস্থা, তাতে চিকিৎসা করানো সম্ভব ছিল না।’
শল্যচিকিৎসক পিনাকি মোহান্তি জানিয়েছেন, পায়ে ২০টি ও হাতে ১২টি আঙুল নিয়ে জন্মানো খুবই বিরল ঘটনা। তিনি বলেন, ‘একে বলে পলিডাকটিলি। যার ফলে জন্মই হয় অতিরিক্ত আঙুল নিয়ে। এটি জিনগত কারণে হয়ে থাকে, যাকে জিন মিউটেশন বলে। বিশ্বে প্রতি পাঁচ হাজার জনের মধ্যে এক থেকে দুজনের ক্ষেত্রে এটি দেখা যায়।’