ভারতের টিভির দাবি ক্ষমা চেয়েছে, প্রথম আলোর ‘না’
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/07/02/photo-1435842576.jpg)
ভারতের গণমাধ্যম দাবি করেছে, ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি ব্যঙ্গচিত্রের জন্য ক্ষমা চেয়েছে প্রথম আলো। তাদের ভাষ্য, ‘পত্রিকাটি স্বীকার করেছে তাদের চিত্র সীমা লঙ্ঘন করেছে এবং তা শোভন নয়।’
যদিও প্রথম আলো এই ক্ষমা চাওয়ার খবরটিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে নাকচ করে দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, ‘সিরিজ শেষ হওয়ার পর ভারত দলকে ব্যঙ্গ করে বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রচার হওয়ার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে পত্রিকাটি। বাংলাদেশের প্রথম আলো পত্রিকায় বিতর্কিত এই বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনটি এসেছিল, তারা এটি স্বীকার করেছে যে, এটা ছিল সীমালঙ্ঘন এবং বাজে রুচির পরিচায়ক।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘ভারতের দল হেরে যাওয়ার পর পত্রিকাটি একটি ব্লেডের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায়, ভারতের ক্রিকেটারদের মাথা অর্ধেক কামানো। বাংলাদেশের জয়ের নায়ক তরুণ বাংলাদেশি খেলোয়াড় মুস্তাফিজুর রহমানকে ব্লেড হাতে বিজ্ঞাপনটিতে দেখানো হয়েছে।’
এরপর ভিডিও প্রতিবেদনটি ইন্ডিয়া টুডের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইল এবং খেলাধুলার খবরের জন্য সুপরিচিত ওয়েবসাইট পর্দাফাঁসও এমন খবর প্রকাশ করে।
এ ব্যাপারে প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ক্ষমা চাওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
সাজ্জাদ শরীফ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রথম আলোর স্যাটায়ার ম্যাগাজিন রস আলোতে কাভারে এই ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। এটি ব্যাঙ্গ মাগ্যাজিন। এতে বিভিন্ন অসঙ্গতি এবং সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে স্যাটায়ার, ব্যাঙ্গ, মজা ইত্যাদি প্রকাশিত হয়। আপনারা দেখেছেন কি না জানি না, বাংলাদেশের সাথে সিরিজের আগে টিভিসহ ভারতীয় গণমাধ্যমে ছোট বাচ্চা, মওকা এসব অনেক মজা করা হয়েছে। এটা ভারতেও হয়েছে, বাংলাদেশেও হয়েছে। আমাদের একটা ফান ম্যাগাজিন রস আলো, সেখানেও এটা নিয়ে মজা করা হয়েছে। এখানে কাউকে আঘাতও করা হয় নাই, কাউকে আহত করার জন্যও কিছু করা হয় নাই।’
গত ২৯ জুন প্রকাশিত প্রথম আলোর ফান ম্যাগাজিন রস আলোর প্রচ্ছদে ছিল একটি কল্পিত কাটারের রসাত্মক বিজ্ঞাপনী উপস্থাপন। যেখানে দেখা যায়, একটা দোকানের বিলবোর্ডে মুস্তাফিজ দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর হাতে একটা পেপার কাটার। কল্পিত দোকানটির নাম ‘টাইগার স্টেশনারি’। আর সেই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ভারতের প্রথম সারির সাত ক্রিকেটার—অজিঙ্কা রাহানে, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাদেজা, অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি, শিখর ধাওয়ান ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। প্রত্যেকেরই মাথার চুল অর্ধেক কাটা। যেন সেটা কাটা হয়েছে মুস্তাফিজের কাটার দিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেটাররা একটা ব্যানার ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। যেখানে লেখা আছে, ‘আমরা ব্যবহার করেছি, আপনিও করুন!’
একে কেন্দ্র করে ভারতীয় গণমাধ্যমে বেশ আলোচনা হয়। তারা একে অসম্মানজনক বলে উল্লেখ করে। দেশটির প্রথম সারির দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ‘ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জয় বাংলাদেশের গণমাধ্যম দারুণভাবে উদযাপন করেছে। কিন্তু ২৯ জুন প্রথম আলো নামের জাতীয় দৈনিকে যে ছবি ছাপা হয়েছে, তা পুরো ব্যাপারকে বাজেভাবে উপস্থাপন করেছে।’ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের শিরোনামেও ফুটে বেরিয়েছে ক্ষোভ, ‘ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রথম সারির বাংলাদেশি দৈনিকের উপহাস।’ আর ‘বাংলাদেশের সংবাদপত্রে ভারতীয় প্লেয়ারদের নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র লজ্জাজনক’ শিরোনামে এবিপি আনন্দ লিখেছে, ‘বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক জয় ভারতের জন্য নিঃসন্দেহে লজ্জাজনক। কিন্তু তার চেয়েও লজ্জাজনক কাজ করেছে বাংলাদেশের এক শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র প্রথম আলো। বাংলাদেশ যথেষ্ট ভালো খেলে জিতেছে, কিন্তু সেই খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব দেখাতে পারেনি বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলো।’