কোলে সন্তান, শরীরে বোমা, অতঃপর…
ইরাকের মসুল শহরের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক নারী। তাঁর কোলে ছোট এক শিশু। প্রথম দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে, সন্তানকে কোলে নিয়ে যাচ্ছেন এক মা। তবে ভেতরের খবর আদতেই ভিন্ন।
ওই নারী আসলে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) একজন সদস্য। তাঁর শরীরের বাঁধা ছিল বোমা। হাতে থাকা সুইচে চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয় সেটি। ফলে মৃত্যু হয় ওই নারীসহ শিশুটির। ঘটনাটি ধরা পড়ে ইরাকের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরায়।
আল-মাউসলিয়া নামে ওই টিভি চ্যানেল আইএস ও ইরাকি সেনাদের মধ্যে যুদ্ধের ভিডিও ধারণ করছিল। সে সময় ক্যামেরায় ধরা পড়েন ওই নারী। পরে বিচার-বিশ্লেষণ করেই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। আত্মঘাতী সেই বোমা হামলায় আহত হন কয়েকজন ইরাকি সেনা ও বেসামরিক লোকজন।
ভিডিও ধারণকারী ক্যামেরাম্যান বলেন, ‘সেনাসদস্যদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওই নারী হিজাবের নিচে লুকিয়ে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।’
ইরাকি বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে কিছুদিন ধরে মসুলে বেশ সংকটময় অবস্থায় রয়েছে আইএস। নিজেদের রক্ষার্থে শেষ ঢাল হিসেবে সংগঠনটি ব্যবহার করছে নারী আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের।
মসুল শহরে সাধারণ জনগণের মধ্যেই কমপক্ষে ২০ নারী বোমা হামলাকারী রয়েছে বলে জানিয়েছে ইরাকি সেনাবাহিনী। আর এ কাজে শিশুদের তারা মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও ইরাকি সেনারা দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে ইরাকের সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সামি-আল-আরিদি বলেন, ‘নারীরা লড়াই করার সময় তাদের সন্তানদের পাশে রাখছে। ফলে বিমান হামলা চালাতে আমরা দ্বিধায় পড়ছি। এমনটি না হলে কয়েক ঘণ্টার যুদ্ধেই তাদের খতম করা যেত।’