ফেলানী হত্যাকাণ্ডে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট
বাংলাদেশি কিশোরি ফেলানী খাতুন হত্যায় চূড়ান্তভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে এই মর্মে আজ সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছে সর্বভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া।
খবরটি নিশ্চিত করে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার সম্পাদক সুশান্ত সরকার বলেন, ‘আমরা আমাদের কথামতো আজ সুপ্রিম কোর্টের কাছে ফেলানী হত্যায় রিট পিটিশন দিয়েছি।’
সুশান্ত বলেন, ‘ভারতীয় সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে তা মানবাধিকারও লঙ্ঘিত হয়। এই মর্মে ভারতের উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর কাছে রিট করা হয়েছে। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে কয়েকদিনের মধ্যে সব কিছু জানানো হবে।’
সুশান্ত সরকার আরো বলেন, ‘ফেলানীর মৃতদেহ ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকার দৃশ্য অমানবিক এবং চূড়ান্তভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই ধরনের ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মানুষের বিবেকের কাছে ভয়ঙ্কর আঘাতের সৃষ্টি করেছে। ফলে ফেলানী হত্যায় মানবিক দিকটিকে আমরা সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের মহামান্য বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছি। যাতে ফেলানী হত্যায় মানবাধিকারের বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালত বিবেচনা করেন।’ পাশাপাশি একই মামলায় দুই বার কেন বিচারপ্রক্রিয়া চলল সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের কোচবিহার জেলার ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের কিশোরি ফেলানী খাতুন। তার পর দুই দফায় বিএসএফের তরফে এই মামলার বিচার শেষে মূল অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে জানান বিএসএফের বিশেষ আদালত। গত ২ জুলাই আদালত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে জানালেও সেই চূড়ান্ত রায়ে বিএসএফের মহাপরিচালক অনুমতি স্বাক্ষর দেননি বলে জানা গেছে।
এর আগে ৮ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে সুশান্ত সরকার ফেলানী হত্যাকাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ঘোষণা করেন। সেদিনই তিনি ১৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই মতোই আজ ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে ফেলানী হত্যায় মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশ্ন তুলে আবেদন জানানো হয়।