গাজা শিশুদের কবরস্থানে পরিণত : জাতিসংঘ

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ব্যাপক বোমাবর্ষণের কারণে গাজা উপত্যকা এখন ‘শিশুদের কবরস্থানে’ পরিণত হয়েছে। খবর এএফপির।
নিউইউর্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন বিপর্যস্ত পরিস্থিতির কারণে মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা আরও জরুরি হয়ে পড়েছে। সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলকে এই অমানবিক ভোগান্তি বন্ধ করতে এবং গাজায় দ্রুত মানবিক সহায়তা বাড়াতে হবে। গাজার দুঃস্বপ্ন একটি মানবিক সংকটের চেয়েও বেশি। এটি একটি মানবিকতার সংকট।’
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে একটি সংগীতানুষ্ঠানে এবং বিভিন্ন ঘরবাড়িতে চালানো হামাসের ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে এক হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে। হামাসের হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া ওইদিন হামাস হামলা চালিয়ে ২৩০ জনেরও বেশি জিম্মি করে। হামাসের প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা চালায়।
গাজায় হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১০ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এদের প্রায় অর্ধেক নারী ও শিশু। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ১৫ লাখের বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এ ছাড়া গাজায় গণমাধ্যমকর্মীদের হত্যার জন্য জাতিসংঘ প্রধান গুতেরেস দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকদের সুরক্ষার দেওয়ার বিষয়ে গঠিত নিউইয়র্ক ভিত্তিক ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের (সিপিজে) মতে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে লড়াইয়ে কমপক্ষে ৩৬ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, বিদ্যুৎ ও অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়া ইনকিউবেটরে থাকা শিশু এবং লাইফ সাপোর্টে থাকা রোগীরা মারা যাচ্ছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে এখনই মানবিক যুদ্ধবিরতি পালন করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সব পক্ষের আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
গুতেরেস আরও বলেন, ‘আমরা গাজায় আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন প্রত্যক্ষ করছি।’