প্রথম দিনেই যেসব নির্বাহী আদেশে সই করতে পারেন ট্রাম্প
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের ‘প্রথম দিনে’ শুধু একজন ‘স্বৈরশাসক’ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তাঁর পুনঃনির্বাচনের প্রচারণার মধ্যে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে তিনি এ কথা বলেন। খবর আল-জাজিরার।
ফক্স নিউজের অনুষ্ঠান সঞ্চালক শন হ্যানিটি জানতে চেয়েছিলেন, ট্রাম্প তার প্রথম দিনের অগ্রাধিকারের দীর্ঘ তালিকা বাস্তবায়নে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন কিনা?
ট্রাম্প হ্যানিটির দিকে ইঙ্গিত করে দর্শকদের বলেছিলেন, “আমি এই লোকটিকে ভালোবাসি। তিনি বলেছেন, ‘আপনি একজন স্বৈরশাসক হতে যাচ্ছেন কি না, তাই না?’ আমি বললাম, ‘না, না, না। তবে প্রথম দিন ছাড়া। আমরা সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছি।”
তখন থেকে ট্রাম্পের অফিসে তার প্রথম দিনের প্রতিশ্রুতিগুলো কেবল বেড়েছে। এর মধ্যে ফেডারেল সরকারকে নতুন করে সাজাতে অভিবাসন সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো এসেছে। নভেম্বরের নির্বাচনে অত্যাশ্চর্য রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের পর আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। হোয়াইট হাউসে তিনি কীভাবে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবেন, সেদিকে এখন সবার দৃষ্টি রয়েছে।
ট্রাম্প তার দপ্তরে প্রথম ঘণ্টাগুলোতে বহু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই ধরনের পদক্ষেপগুলো নতুন প্রশাসনের জন্য তাদের অবস্থান তৈরিতে প্রচলিত অনুশীলন, এমনকি যদি সেই আদেশগুলো কংগ্রেসনাল বা আইনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বাতিলও করা হয়। হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনের এ সময়ে ট্রাম্পের কাজের চাপ বেশি, এর মধ্যে প্রায় ৬০ দিনের কাজের একটি প্রতিশ্রুতি এবং ১০০টি নির্বাহী আদেশ থাকতে পারে।
রিপাবলিকান সিনেটর জন বারাসো ইতোমধ্যে নির্বাহী আদেশের একটি ‘ঝড়’ আসছে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, যাতে অনেক বিস্ময়কর বিষয়ও রয়েছে।
ট্রাম্পের উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিশ্রুতি
গণনির্বাসন
অভিবাসন ও যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে অবৈধ প্রবেশ ঠেকানো ছিল ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচনের প্রচারণার অন্যতম প্রধান বিষয়।
৪ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হওয়ার কয়েক দিন আগে ট্রাম্প তাঁর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রথম দিনে আমি আমেরিকার ইতিহাসে অপরাধীদের সবচেয়ে বড় নির্বাসন কর্মসূচি চালু করব। আমরা তাদের বের করে দিতে যাচ্ছি। আমাদের তা করতেই হবে।’
ট্রাম্প কীভাবে এ ধরনের বিশাল অভিযান পরিচালনা করবেন এবং অর্থায়ন করবেন, এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি।
মার্কিন সরকারের তথ্যমতে, দেশটিতে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন। ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করবেন এবং সেনাবাহিনীর সহায়তা নেবেন।
ট্রাম্প ঠিক কাদের টার্গেট করতে পারেন তা-ও অস্পষ্ট। কিছু সমর্থক যুক্তি দিয়েছেন, আইনি কাগজপত্র ছাড়া দেশে থাকা সব ব্যক্তি অপরাধী। আবার কেউ কেউ আশা করছেন, ট্রাম্প চুরি বা হামলার মতো অপরাধে দোষী সাব্যস্তদের জন্য এই ‘গণনির্বাসন’ অভিযান চালাবেন।
‘মুসলিম নিষিদ্ধ’
ট্রাম্পের প্রথম দিনের অঙ্গীকারগুলোর মধ্যে আরেকটি হলো তার প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত একটি নির্বাহী আদেশ, যা পরে ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। এতে সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন ও সুদানসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞাটি অবশ্য পরে আইনি চ্যালেঞ্জে মুখোমুখি হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তা বাতিল করেন।
তবে ট্রাম্প তাঁর নতুন মেয়াদে ওই নিষেধাজ্ঞা পুনঃপ্রবর্তনের পাশাপাশি শরণার্থী নিবন্ধন স্থগিত, তাদের পুনর্বাসন বন্ধ এবং সন্ত্রাসীদের দেশ থেকে দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটন ডিসিতে রিপাবলিকান অনুদান দাতাদের বলেন, ‘আমরা গাজা উপত্যকার মতো সন্ত্রাস আক্রান্ত এলাকায় উদ্বাস্তু পুনর্বাসন নিষিদ্ধ করব, আমাদের সীমান্ত সিল করব এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনব।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কথা মনে আছে? আমরা বিশ্বের নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে লোকদের আসতে দেইনি। কারণ আমি চাইনি, লোকেরা আমাদের শপিং সেন্টারগুলোকে ভেঙে ফেলুক, জ্বালিয়ে দিক এবং মানুষকে হত্যা করুক।’
নাগরিকত্ব সীমাবদ্ধ করা
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প তার প্রথম কর্মদিবসে নির্বাহী আদেশে মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জনের যোগ্যতা সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে চাইবেন। অনেকদিন ধরেই তাঁর এ পরিকল্পনা রয়েছে। ২০২৩ সালের মে মাসে ট্রাম্প তার প্রচারণার ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন, যেখানে এ নিয়ে তার লক্ষ্যের রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমার নতুন মেয়াদের প্রথম দিনে আমি ফেডারেল সংস্থাগুলোকে স্পষ্ট বার্তা দিতে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করব। আইনের সঠিক ব্যাখ্যার আওতায় সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, অবৈধ অভিবাসিদের ভবিষ্যৎ সন্তানরা সরাসরি মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না।’
মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর অধীনে দেশটিতে জন্মগ্রহণকারী যে কেউ তাদের পিতামাতা সূত্রে নাগরিকত্ব লাভ করে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানো
ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি নজরদারি রাখলে ইউক্রেন ও গাজায় কখনো যুদ্ধ শুরু হতো না।
ট্রাম্পের অভিষেকের দুদিন আগে গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক অভিযান বন্ধে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে, যা ২০২২ সালে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণের মাধ্যমে শুরু করেছিল রাশিয়া। ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে এই সংঘাত দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ২০২৩ সালের মে মাসে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের ‘২৪ ঘণ্টার’ মধ্যে যুদ্ধ ‘একদম শেষ’ হয়ে যাবে। ট্রাম্প অবশ্য তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নেওয়ার সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আরও সতর্ক হয়েছেন। তবুও গত ১৩ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ‘খুব দ্রুত’ সাক্ষাৎ করবেন।
ট্রাম্পের দল ইঙ্গিত দিয়েছে, তিনি একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন, যাতে মস্কোকে ছাড় দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
শুল্ক বৃদ্ধি
অফিসে ট্রাম্পের প্রথম দিনের অগ্রাধিকারের একটি হলো ফেডারেল সরকার পরিচালনা পদ্ধতি নিয়ে নতুন কিছু করা। গত ১৪ জানুয়ারি ট্রাম্প বলেছেন, প্রথম দিনে তিনি একটি ‘বৈদেশিক রাজস্ব পরিষেবা’ তৈরি করবেন, যারা শুল্ক ও বিভিন্ন বিদেশি উত্স থেকে আসা সমস্ত রাজস্ব সংগ্রহ করবে।
ট্রাম্প একটি বিস্তৃত শুল্ক কর্মসূচি চালুর কথা জানিয়েছেন, যেখানে চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত এবং বিভিন্ন মাত্রায় বিদেশি পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হবে। দেশীয় উত্পাদন বাড়াতেই এমন উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।
সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং মাদক চোরাচালান রোধে আরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
অর্থনীতিবিদরা এই পদক্ষেপের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এই ধরনের উচ্চ শুল্ক একটি বাণিজ্য যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা মার্কিন অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
৬ জানুয়ারির আসামিদের ক্ষমা করা
ট্রাম্প বারবার ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ইউএস ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডবের জন্য গ্রেপ্তারকৃতদের ‘রাজনৈতিক বন্দি’ ও ‘জিম্মি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এমনকি, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম মিনিটের মধ্যে তাদের ক্ষমা প্রদান শুরুর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তবে সময়সীমা এবং দাঙ্গায় অভিযুক্ত সব আসামি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য হবেন কিনা, তা নিয়ে তখন থেকেই বেশ অস্পষ্ট ছিলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প গত মাসে টিভি শো মিট দ্য প্রেসকে বলেন, ‘সম্ভবত, আমি এটি খুব দ্রুত করব।‘ এ সময় দাঙ্গায় অভিযুক্তদের ক্ষমা করার ক্ষেত্রে তার পরিকল্পনায় কিছু ব্যতিক্রম আসতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ ছাড়া রোববার নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ‘শুধু শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ক্ষমা করা উচিত’ বলে মন্তব্য করেন।
শিল্পে নিয়ন্ত্রণ হ্রাস
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি হোয়াইট হাউসে পুনরায় প্রবেশের পর শিল্পে প্রবিধান বা বিধিনিষেধ অপসারণের একটি বিস্তৃত প্রোগ্রাম গ্রহণের পরিকল্পনা করছেন। তিনি ব্যবসায় বাধা সৃষ্টির জন্য এবং আমেরিকান ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত খরচের বোঝা চাপানোর জন্য বিধি-বিধানকে দায়ী করেন।
অক্টোবরে এক প্রচারণা সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রথম দিনে আমি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করব, যাতে প্রতিটি ফেডারেল সংস্থাকে অবিলম্বে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী প্রতিটি কঠোর বিধান সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হবে।’
‘এটি আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিধিবিধান হ্রাস হতে চলেছে এবং এটি খুব দ্রুত ঘটতে যাচ্ছে’, যোগ করেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের পরিবর্তন আনতে চাওয়া কিছু বিধিবিধান পরিবেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর মধ্যে প্রথম দিনের প্রতিশ্রুতি হলো প্রেসিডেন্ট বাইডেনের একটি কার্যনির্বাহী পদক্ষেপ বাতিল করে তা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা। সেটি হলো উপকূলীয় জলসীমার ৬২৫ মিলিয়ন একরজুড়ে অফশোর ড্রিলিংয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন বাইডেন।
ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি অবিলম্বে বাইডেনের তথাকথিত ‘বৈদ্যুতিক গাড়ির আদেশ’ বাতিল করে পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবেন। ওই আদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়াসে গাড়ি নির্মাতাদের জন্য উচ্চ কার্বন নির্গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
‘সাংস্কৃতিক যুদ্ধ’
ট্রাম্পের প্রথম দিনের প্রতিশ্রুতিতে বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা দীর্ঘকাল ধরে তার ভিত্তিকে মজবুত করেছে। এর মধ্যে একটি হলো ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু। ডিসেম্বরে তিনি বলেন, ‘ট্রান্স জেন্ডার পাগলামি’ বন্ধ করা উচিত।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রান্স জেন্ডারদের নারী বিভাগে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লিঙ্গ নিশ্চিত-জনিত সেবা নিষিদ্ধ করবেন। তিনি এটিকে ‘শিশুর যৌনাঙ্গচ্ছেদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ট্রাম্প ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক প্রচারণা ভিডিওতে বলেন, ‘প্রথম দিনে আমি তথাকথিত লিঙ্গ-নিশ্চিত সেবা সংক্রান্ত জো বাইডেনের নিষ্ঠুর নীতিগুলো প্রত্যাহার করব।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি একটি নতুন নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করব, যাতে প্রতিটি ফেডারেল সংস্থাকে যেকোনো বয়সে লিঙ্গ এবং লিঙ্গ পরিবর্তনের ধারণাকে প্রচার করে এমন সব প্রোগ্রাম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হবে।’
জাতি তত্ত্ব, ট্রান্স জেন্ডার উন্মাদনা এবং অন্যান্য অনুপযোগী জাতিগত, যৌন বা রাজনৈতিক বিষয়বস্তু প্রচার করে এমন স্কুল ও কলেজগুলো থেকে অবিলম্বে ফেডারেল তহবিল বাতিল করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
আফগানিস্তানে বিপর্যয়ের জন্য বরখাস্ত
রিয়েলিটি টিভি শো দ্য অ্যাপ্রেন্টিসে ট্রাম্প নির্মম ব্যবসায়িক দক্ষতায় কঠিন কথা বলতে পারা ‘রিয়েল এস্টেট মুঘল’ হিসেবে নিজের একটি ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছিলেন। তার ট্যাগলাইন ছিল ‘ইউ আর ফায়ার (আপনি বরখাস্ত)’, যা তার রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছে। এমনকি প্রচার সমাবেশেও ট্রাম্প দর্শকদেরকে তার অযোগ্য বলে বিবেচনা করে বরখাস্ত করার হুমকি দিতেন।
ট্রাম্প এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, তিনি প্রথম কর্মদিবসেই ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের বিশৃঙ্খলভাবে প্রত্যাহারের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছেন।
ট্রাম্প ২০২০ সালে তালেবানের সঙ্গে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা কমিয়ে আনার জন্য একটি চুক্তি করেছিলেন। কিন্তু মার্কিন বাহিনী পিছু হটলে তালেবানরা আক্রমণ শুরু করে, যাতে ভঙ্গুর মার্কিন সমর্থিত সরকারের পতন হয়।
আফগানিস্তানের রাজধানী পতনের পরে তাড়াহুড়ো করে মার্কিন সেনারা সরে যাওয়ার সময় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সেনা এবং আনুমানিক ১৭০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিল।
ট্রাম্প এই প্রাণহানির জন্য তার উত্তরসূরি বাইডেনকে দায়ী করেছেন। যদিও ২০২৩ সালের একটি প্রতিবেদনে উভয় নেতার দায় আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, ট্রাম্প অন্য একটি বিষয়ের দিকে আঙুল তুলেছেন।
গত আগস্টে মিশিগানে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রথম দিন দুপুরে আমার ডেস্কে আফগানিস্তানের বিপর্যয়ের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার পদত্যাগপত্র পাব। আপনি জানেন, কিছু মানুষকে বহিষ্কার করতে হয়। যখন তারা খারাপ কাজ করে, তখন তাদেরকে বরখাস্ত করতে হবে।’