ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি উদযাপনে ইসরায়েলের বাধা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/09/philistin_mukti_thaamb.jpg)
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গতকাল শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পান শাদি বারঘোটি। তার মুক্তিতে উল্লাস প্রকাশ করে জনতা তাকে এবং তার বাবা ফাখরি বারঘোটিকে কাঁধে তুলে নেয়। তবে এ সময় শরীরে তীব্র ব্যথায় দিশেহারা হয়ে পড়েন ফাখরি। ৭১ বছর বয়সী ফাখরি বারঘোটি তার ছেলের মুক্তির আনন্দে চোখের পানি সামলে রাখতে পারেননি সে সময়টাতে। খবর এএফপির।
ছেলের মুক্তির আগের রাতে অধিকৃত পশ্চিম তীরের কোবার গ্রামে বারঘোটি পরিবারের বাড়িটিতে ইসরায়েলি বাহিনী অতর্কিত অভিযান চালায়। এ সময় ফাখরি বারঘোটিকে মারধর করে বলা হয় ছেলের মুক্তি উদযাপন না করতে। ফাখরি বলেন, ‘মধ্যরাতে তারা আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে সবকিছু তছনছ করে দেয়, এ সময় আমাকে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে প্রচণ্ড মারধর করে। পরে পরিবারের লোকজন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তাররা জানায় আমার পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে।’
এ বিষয়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের অ্যাডভোকেসি গ্রুপ জানায়, যেসব ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে তাদের বাড়িতে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে।
কোবার গ্রামে ফাখরি বাঘোটির বাড়িতে অভিযানের অভিযোগের বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তারা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, ওই এলাকাটিতে অভিযান পরিচালনার সময় সহিংস ঘটনার বিষয়ে সামরিক কর্তৃপক্ষ অবগত নয়।
এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘সন্ত্রাসীদের’ মুক্তিতে সন্ত্রাসবাদের সমর্থনে যেকোনো ধরনের উদযাপন ও সমাবেশ বা মিছিল করতে নিষেধ করা হলো।
২০০৩ সাল থেকে ৪৭ বছর বয়সী শাদি বারঘোটি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ছিলেন। অস্ত্র রাখার অভিযোগসহ অবৈধ সংগঠন করার ও খুনের মতো অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ইসরায়েলের বিচার মন্ত্রণালয় এই তথ্য দিয়েছে।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/09/philistin_mukti_inaar.jpg)
গতকাল শনিবার গাজা থেকে হামাসের হাতে থাকা তিনজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মোট ১৮৩ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়। এদের মধ্যে ৪১ জন পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিরে আসে, চারজনকে মুক্তি দেওয়া হয় ইসরায়েলের দখল করা পূর্ব জেরুজালেম থেকে, ১৩১ জনকে পাঠানো হয় গাজায় এবং সাতজনকে মিশরে প্রত্যার্পণ করা হয়।
রামাল্লায় মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের স্বাগত জানাতে শতশত সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে হাসতে হাসতে শ্লোগান দিয়ে তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে।
স্বজনদের তৈরি দেয়ালের মাধ্যমে এ সময় শাদি বারঘোটিকে আড়াল করে রাখা হলেও পরে জনতার সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে কাঁধে তুলে নেওয়া হয়। ধূসর রঙের ট্র্যাকস্যুট পরা শাদি সে সময় বলেন, ‘আমরা সব সময় স্বপ্ন দেখতাম এমনটা ঘটবে। আমরা জানতাম একদিন কারাগার পরিচালক জেলের দরজা খুলতে বাধ্য হবেন।’ এ সময় তার চারপাশের লোকজনের সঙ্গে হাত মেলাতে ব্যস্ত শাদি চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘প্রতিরোধ দীর্ঘজীবী হোক।’