রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইউক্রেন

রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এ সিদ্বান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।
সৌদি আরবের জেদ্দায় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, এখন রাশিয়ার ওপর নির্ভর করছে, তারা এই প্রস্তাবে রাজি হবে কি না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটিকে একটি ‘ইতিবাচক’ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করে বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব রাশিয়াকে বোঝানো যে, যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উভয়পক্ষ তাদের আলোচক দল নির্ধারণ করেছে এবং যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করবে।
রুবিও বলেন, ‘আজ আমরা একটি প্রস্তাব দিয়েছি, যা ইউক্রেন গ্রহণ করেছে। এখন আমরা এটি রাশিয়ার কাছে নিয়ে যাব এবং আশা করি তারা শান্তির পক্ষে থাকবে। এখন সিদ্ধান্ত তাদের হাতে।’
এই ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি জেলেনস্কির আংশিক স্থল ও আকাশ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের চেয়েও বিস্তৃত।
এ বিষয়ে রাশিয়া এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মঙ্গলবার ক্রেমলিন জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আলোচনার বিষয়ে অবহিত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন এবং আশা করেন, পুতিন প্রস্তাবে সম্মত হবেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘শান্তির জন্য দুজনের সম্মতি লাগবে।’ তিনি আরও জানান, রাশিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের আলোচনা বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার মস্কোতে ইউক্রেনের চালানো একটি বড় ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন, যা রাশিয়ার রাজধানীতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৩৭টি ড্রোন হামলা হয়, যার মধ্যে মস্কোর ওপর ৯১টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়।
অন্যদিকে, ইউক্রেন জানিয়েছে, রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রুশ বাহিনী ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, তারা রাশিয়ার ছোড়া ১২৬টি ড্রোনের মধ্যে ৭৯টি এবং একটি ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে।
মার্কিন কৌশলের পরিবর্তনের ফলে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে জরুরি বৈঠক হয়েছে, কারণ ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তি আলোচনায় ইউরোপকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না।
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন মঙ্গলবারের আলোচনাকে ‘ইতিবাচক অগ্রগতি’ বলে উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর জন্য চাপ দিচ্ছে, তবে ইউক্রেনের চাওয়া নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে এখনও রাজি হয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
গত শুক্রবার ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেন, যদি তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হয়।
ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া এখনই ইউক্রেনকে চরমভাবে চূর্ণ করছে, তাই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাদের চাপে রাখা হবে।
এদিকে, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র ‘দ্রুত’ একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাশিয়া সফরের পরিকল্পনা করছেন, তবে এটি পরিবর্তিত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।