এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ : তৃতীয় দিনে গ্রেপ্তার ৩৪৩

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের পদত্যাগে দাবিতে বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে ৩৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আজ শনিবার (২২ মার্চ) দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ চলাকালে তাদের আটক করা হয়।
দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ মার্চ) দেশটির জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ও রাজধানী ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোলুকে গ্রেপ্তারের পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়।
সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা ও দুর্নীতির অভিযোগে ইমামোলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকে যেদিন পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে, তার পরদিন আগামী ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণার কথা ছিল এই রাজনীতিবিদের।
গতকাল শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে দেওয়া এক ভাষণে বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, ‘রাস্তার সন্ত্রাস কিংবা বিক্ষোভকারীরের কাছে তার সরকার আত্মসমর্পণ করবে না। জনশৃঙ্খলা ব্যাহত হয়, এমন কিছু মেনে নেওয়া হবে না।’
স্থানীয় সময় শনিবার (২২ মার্চ) দিনের শেষভাগে ইমামোলুকে আদালতে তোলার কথা রয়েছে। এর আগে গেল তিন ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দেশটির পুলিশ।
এরদোগানের সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের একজন একরেম ইমামোলুকে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা।
ইমামোলু ছাড়া আরও শতাধিক রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুক্রবারও এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবিতে ইস্তাম্বুলে হাজার মানুষকে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
এ ঘটনাকে ২০১৩ সালের পরে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন অনেকে। সে বছরের আন্দোলন চলাকালে অন্তত আট জন নিহত হয়েছিলেন।
এবার অবশ্য বিক্ষোভ দমনে ইস্তানবুলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এ ছাড়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া শহরগুলোতে সব ধরনের জমায়েতের ওপর পাঁচ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটা সহিংসতার কারণে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অবস্থিত একটি মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইস্তানমুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর পেপার স্প্রে, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমির শহরেও বলপ্রয়োগে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। আঙ্কারায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একটি প্রধান সড়ক ধরে অগ্রসর হতে গেলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
দেশটির প্রশাসনের এমন বাধা ও প্রেসিডেন্টের হুমকির তোয়াক্কা না করেই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এমনকি, এরদোয়ানের শাসনকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তুলনা করে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সেইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর দাবি তোলেন অনেকে।