নেপালে বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ৩৪, আহত ১৩৬৮

নেপালে চলমান সহিংস বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে এই বিক্ষোভে আরও এক হাজার ৩৬৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়। খবর আনাদুলুর।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. প্রকাশ বুধাথোকি বলেন, আহতদের মধ্যে ৯৪৯ জনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই হতাহতের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার পর থেকেই নেপালে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ‘জেনারেন জেড’ নামে পরিচিত তরুণ বিক্ষোভকারীরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করলে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় সেনাবাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে ও নেপালি সৈন্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোরে বাগমতি প্রদেশের রামেছাপ জেলায় একটি কারাগার ভাঙার চেষ্টা বানচাল করতে সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত দুইজন নিহত হন।
পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ও কোনো বন্দি পালাতে পারেনি।
নেপাল প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভের সময় দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে মোট ১৪ হাজার ৩০৭ জন বন্দি পালিয়ে গেছে।
বিক্ষোভের কারণ
সরকার ফেসবুক, এক্স ও ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করার পর ‘জেন জেড’ নামে পরিচিত তরুণদের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) পুলিশ জনতার ওপর গুলি চালালে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়, যার মধ্যে অনেকেই স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পরা শিক্ষার্থী।

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও পুলিশের গুলিতে নিহতদের প্রতি ক্ষোভ ও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনরোষের কারণে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু শীর্ষ নেতার বাড়িতে ও সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয় ও সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করে কিছু মন্ত্রীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিক্ষোভের মুখে ওলি পদত্যাগ করার পর বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা চলছে। একটি অনলাইন জরিপে বিক্ষোভকারী তরুণরা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দেখতে চেয়েছেন, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।