মার্কিন শুল্কের মুখে আঞ্চলিক সফরে শি জিনপিং

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের কারণে যখন চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে তখন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একটি গুরুত্বপূর্ণ সফর শুরু করেছেন।
আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে পৌঁছেছেন শি জিনপিং। দুই দিনের এই সফরে তিনি ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি লুং কুয়াং, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। খবর বিবিসির।
এই সফরে তার পরবর্তী গন্তব্য মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়া। এই তিনটি দেশই চীনের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার।
বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরশীল এই তিনটি দেশ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে তাদের রপ্তানির ওপর ২৪ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের মুখোমুখি হয়েছিল। যদিও গত সপ্তাহে ৯০ দিনের জন্য সেই শুল্ক স্থগিত করা হয়েছে, তবে পরিস্থিতি এখনও অনিশ্চিত।

অন্যদিকে, চীনের ওপর বিশাল ১৪৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শি জিনপিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে আগ্রহী।
ওসিবিসি ব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ লাভান্যা ভেঙ্কটেশ্বরণ মনে করেন, বাণিজ্য এবং প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের এই অঞ্চলের সঙ্গে অত্যন্ত শক্তিশালী সম্পর্ক বিদ্যমান। চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চীন স্বাভাবিকভাবেই সেই দেশগুলোর ওপর জোর দেবে যাদের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সেই তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের অ্যালেক্স হোমস এই সফরকে চীনের ‘জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যেখানে বৃহত্তর আর্থিক সহায়তা ও ঋণের প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে।
অ্যালেক্স আরও উল্লেখ করেন, চীনের ওপর আকাশচুম্বী শুল্কের কারণে চীনা পণ্যের তৃতীয় দেশের মাধ্যমে রপ্তানি করার প্রবণতা আরও বাড়বে।
তবে লাভান্যা ভেঙ্কটেশ্বরণ মনে করেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো চীনের সঙ্গে আলোচনায় যথেষ্ট সতর্ক থাকবে। কারণ ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ক্রমবর্ধমানভাবে লক্ষ্যবস্তু হওয়ার একটি চাপা ভয় তাদের মধ্যে কাজ করছে। ফলস্বরূপ এই সফর তাৎক্ষণিক কোনো বড় চুক্তি নাও নিয়ে আসতে পারে। যদিও বৃহত্তর সহযোগিতার একটি সম্ভাবনা তিনি দেখছেন। তার মতে, এই সফর মূলত সম্পর্ক স্থাপন ও বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও মজবুত করার একটি প্রয়াস।