কিয়েভে রুশ হামলায় ‘অসন্তুষ্ট’ ট্রাম্প, পুতিনকে থামার আহ্বান

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তবে এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালের’ পোস্টে পুতিনের প্রতি সমালোচনা করে ট্রাম্প লেখেন, ‘এটা অপ্রয়োজনীয় এবং খুবই খারাপ সময়। ভ্লাদিমির, থামুন!’
এদিন রাত পর্যন্ত ইউক্রেনের রাজধানীতে রুশ হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
গত জুলাইয়ের পর কিয়েভে সবচেয়ে ভয়াবহ এই হামলার ঘটনায় পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য উভয়পক্ষের ওপর ‘প্রচুর চাপ’ দিচ্ছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোরের সঙ্গে উপস্থিত হয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘জীবন বাঁচানো ছাড়া কারও প্রতি আমার কোনো আনুগত্য নেই।’
পুতিনের ওপর হতাশ হলেও ‘চুক্তি হয় কিনা দেখার জন্য’ এক সপ্তাহ অপেক্ষা করবেন বলেও জানান ট্রাম্প। তবে বোমা হামলা বন্ধ না হলে ‘কিছু ঘটনা ঘটবে’ বলেও সতর্ক করেন তিনি।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর আরও বেশি চাপ দিতে পারত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, রাশিয়ার ওপর আরও বেশি চাপ প্রয়োগ করা হলে আমরা আমাদের অবস্থান আরও কাছাকাছি নিয়ে আসতে পারব।’
যুদ্ধ বন্ধে কোনো ছাড় দিতে রাজি কিনা জানতে চাইলে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হওয়াটাই ‘বিশাল ছাড়’ এবং ‘যুদ্ধবিরতির জন্য প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত’।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতি করতে রাজি থাকে, তাহলে ইউক্রেনের ওপর ব্যাপক হামলা বন্ধ করতে হবে। ইউক্রেনীয়দের ধৈর্য ফুরিয়ে যাচ্ছে, কারণ আমরা হামলার শিকার, অন্য কেউ নয়।’

এই হামলার কারণে জেলেনস্কি তার সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন।
কিয়েভে হামলার আগে ট্রাম্প ইউক্রেনকে রাশিয়ার দখলে থাকা এলাকা ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ায় দুই নেতার মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যাচ্ছিল। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও ইউক্রেনকে কিছু অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। তবে ইউক্রেন ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখল করা ক্রিমিয়া ছাড়তে নারাজ।
মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট মার্কো রুবিও বলেন, “আমরা তাদের সমাপ্তি রেখা দেখিয়েছি। আমাদের প্রয়োজন উভয়পক্ষের ‘হ্যাঁ’ বলা। কিন্তু গতকাল রাতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাইয় সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া উচিত, কেন এই যুদ্ধ শেষ হওয়া দরকার।”
গত বছর নির্বাচনি প্রচারণার সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে দ্রুত এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবেন। তবে নতুন করে এই হামলা শান্তি চুক্তির প্রচেষ্টায় নতুন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।