ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ায় বাগদাদ থেকে কর্মী সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ইরাকের বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে অপ্রয়োজনীয় কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস জানিয়েছে, ইসরায়েল ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন তথ্য পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কিছু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা করছে হোয়াইট হাউস। ফলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার আলোচনায়ও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
তবে মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ আগামী রোববার ওমানের মাসকটে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে ষষ্ঠ দফার বৈঠকে বসবেন, এমনটাই জানিয়েছে এক্সিওএস।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, “আমরা সব দূতাবাসেই কর্মীদের নিরাপত্তা মূল্যায়ন করে থাকি। সর্বশেষ মূল্যায়নের ভিত্তিতে ইরাকে আমাদের মিশনের উপস্থিতি হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, “এই অঞ্চল এখন বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, তাই আমেরিকানদের এলাকা ত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেবো না।”
ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থামাতে রাজি হবে কিনা, সে বিষয়ে তার আস্থা কমে যাচ্ছে।
সিবিএস জানিয়েছে, ট্রাম্প সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ৪০ মিনিটের একটি "উত্তেজনাপূর্ণ" ফোনালাপ করেছেন। নেতানিয়াহু বরাবরই সামরিক অভিযানের পক্ষে মত দিয়ে আসছেন।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আলোচনা ব্যর্থ হলে এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালালে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে জবাব দেব।”
রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ কুয়েত, বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে মার্কিন সেনাদের পরিবারদের স্বেচ্ছামূলকভাবে সরিয়ে নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণার পরপরই তেলের দাম চার শতাংশের বেশি বেড়ে যায়, যা অঞ্চলের অনিশ্চয়তা এবং সরবরাহ ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।
বর্তমানে ইরাকে প্রায় ২৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।
ব্রিটেনের নৌবাণিজ্য নিরাপত্তা সংস্থা সতর্ক করেছে, মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা শিপিং ও জাহাজ চলাচলেও প্রভাব ফেলতে পারে।