ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা : আজ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ

বিতর্কিত কাশ্মীর ভূখণ্ডের ভারতীয় অংশের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল এক বন্দুক হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহতের ঘটনায় সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে ভারত। এ ঘটনার পর থেকে দেশ দুটি মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকারে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আজ সোমবার (৫ মে) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে পেহেলগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হবে।
এনডিটিভি বলছে, ইসলামাবাদের অনুরোধে এই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘে আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং ভারতের একতরফা পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবে। পাকিস্তান এই কূটনৈতিক উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের অংশ হিসেবে দেখছে।
গতকাল রোববার (৪ মে) এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২২ এপ্রিল অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। ২০০০ সালের পর এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ভারত কোনো প্রকার প্রমাণ ছাড়াই এই হামলার আন্তঃসীমান্ত যোগসূত্রের ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে পাকিস্তান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
এরপর থেকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। পাকিস্তান তাদের সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সেনাবাহিনীকে ‘কার্যকরী স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে যেকোনো সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও, পাকিস্তান নয়াদিল্লির যেকোনো ‘দুঃসাহসিক’ পদক্ষেপের ‘দ্রুত’ জবাব দেওয়ার জন্য সামরিক সতর্কতা জারি রেখেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ভারতের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড, উসকানি ও উসকানিমূলক বক্তব্য সম্পর্কে পাকিস্তান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করবে।’
পাকিস্তান বিশেষভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার জন্য ভারতের ‘অবৈধ পদক্ষেপের’ বিষয়টি তুলে ধরবে এবং স্পষ্ট করবে যে, নয়াদিল্লির ‘আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড’ কীভাবে এই অঞ্চলে ‘শান্তি ও নিরাপত্তা’ বিপন্ন করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য পাকিস্তানের প্রচেষ্টার অংশ।’