যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় যোগ দিতে ওমান যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চতুর্থ দফায় আলোচনায় বসতে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে যাচ্ছেন। রোববার (১১ মে) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মুখপাত্র জানান, স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে মাস্কাটে এই আলোচনা শুরু হবে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল ইতোমধ্যেই মাস্কাটে অবস্থান করছে।
দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, আশঙ্কা করে যে, ইরান বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচির আড়ালে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। যদিও তেহরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করে।
২০১৫ সালে ইরান এবং ছয় বিশ্বশক্তির (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীন) মধ্যে একটি ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তির অধীনে ইরান তার পরমাণু কার্যক্রমের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনে নিতে রাজি হয়েছিল, যার বিনিময়ে দেশটির ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
তবে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের ওপর পুনরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর পর থেকেই চুক্তিটি কার্যত ভেঙে পড়ার উপক্রম হয় এবং ইরানও ধীরে ধীরে চুক্তির শর্তগুলো থেকে সরে আসতে শুরু করে।
বর্তমান মার্কিন প্রশাসন ফের এই চুক্তিটিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবেই ওমানের মধ্যস্থতায় ইরানের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে আরও তিন দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
এবারের মাস্কাট আলোচনা সেই প্রচেষ্টারই অংশ। বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ, এর মাধ্যমেই ভবিষ্যতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে একটি স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।