ব্যর্থ হলো ভারতের ১০১তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ অভিযান

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো আজ রোববার (১৮ মে) তাদের পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (পিএসএলভি-সি৬১) এর মাধ্যমে ১০১তম কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) ইওএস-০৯ উৎক্ষেপণ করে। তবে উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট পরেই মিশনটি ব্যর্থ হয়।
ইসরো জানায়, চার স্তরবিশিষ্ট পিএসএলভি রকেট দ্বিতীয় স্তর পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে কাজ করেছিল। কিন্তু তৃতীয় স্তরে “একটি পর্যবেক্ষণজনিত সমস্যা” দেখা দেওয়ায় উপগ্রহটি নির্ধারিত সূর্য-সিঙ্ক্রোনাস পোলার কক্ষপথে স্থাপন করা যায়নি। খবর এনডিটিভির।
ইসরোর প্রধান বলেন, “দ্বিতীয় স্তর পর্যন্ত পারফরম্যান্স স্বাভাবিক ছিল। আমরা বিশ্লেষণের পর ফিরে আসব।”
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে ইসরো লেখে, “আজ ১০১তম উৎক্ষেপণ চেষ্টা করা হয়েছিল। পিএসএলভি-সি৬১-এর পারফরম্যান্স দ্বিতীয় স্তর পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। তবে তৃতীয় স্তরে কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে মিশনটি সফল হয়নি।”
এটি পিএসএলভি রকেটের ৬৩তম ফ্লাইট এবং পিএসএলভি-এক্সএল সংস্করণের ২৭তম ব্যবহার। এই উৎক্ষেপণটিই ১৮ মে পর্যন্ত ইসরোর মোট ১০০ সফল উৎক্ষেপণের পরবর্তী প্রচেষ্টা ছিল।
উল্লেখ্য, এই মিশনটিকে টেকসই মহাকাশ কার্যক্রম ও দায়িত্বশীল উৎক্ষেপণ হিসেবে দেখা হচ্ছিল, কারণ ইওএস-০৯-এ ডিঅরবিটিং ফুয়েল রাখা হয়েছিল, যেন মিশন শেষে উপগ্রহটি নিরাপদভাবে ধ্বংস করা যায়।
ইওএস-০৯ হলো একটি উন্নত আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট, যা সি-ব্যান্ড সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার (এসএআর) প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এটি দিন বা রাত, যেকোনো আবহাওয়াতেই পৃথিবীর পৃষ্ঠের হাই-রেজুল্যুশন ছবি তুলতে পারে। এই প্রযুক্তি ভারতের কৃষি, বন ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ মোকাবিলা ও সামরিক নজরদারিতে সহায়ক হতো।

ইসরোর সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী ড. ডব্লিউ সেলভামূর্তি বলেন, “এই উপগ্রহ কৃষি, বন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বা এমনকি কৌশলগত ও সামরিক কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারত। সীমান্ত নজরদারিতেও এটি সাহায্য করতে পারত।”
তবে এই উৎক্ষেপণ সরাসরি দেখার সুযোগ পায়নি সাধারণ দর্শকরা। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন স্পেস সেন্টারে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল, যার পেছনে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ঘিরে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
রানিপেট থেকে আসা এক শিশু জানায়, “আমরা এতদূর থেকে এসেছি, কিন্তু দেখতে পারলাম না। তবে তাও ভালো লাগছে এখানে আসতে পেরে। গর্ব হচ্ছে।”
একজন পর্যটক বলেন, “১৫০ কিমি দূর থেকে এসেছি, দেখতে না পারায় খারাপ লাগছে, তবে আমি আবার আসব। আমার স্বপ্ন, আমি একদিন ইসরো চেয়ারম্যান হব। আমি মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে খুবই আগ্রহী।”