১০ দিন পর নিয়ন্ত্রণে সিরিয়ার ভয়াবহ দাবানল

সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে দেশটির নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা। ১০ দিনের এই দাবানলে বিশাল বন ও কৃষিজমি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, জোরপূর্বক সরিয়ে নিতে হয়েছে অনেক মানুষকে। খবর এএফপির।
ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, শনিবার (১২ জুলাই) থেকে স্থলভাগে থাকা টিমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো শীতল করার কাজ করছে। নতুন করে আগুন ছড়ানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তারা বলেছেন, আগুনের বিস্তার বন্ধ হয়ে গেছে, সব দিক থেকে আগুনের উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ায় তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে এই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, দাবানলে প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার (৪০ বর্গমাইল) বন ও কৃষিজমি ধ্বংস হয়েছে।
দাবানল যখন তীব্র আকার ধারণ করছিল, তখন সিরিয়ার জরুরি কর্মীরা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। উচ্চ তাপমাত্রা, তীব্র বাতাস, রুক্ষ পাহাড়ি এলাকা ও যুদ্ধের বিস্ফোরক অবশিষ্টাংশের ঝুঁকির মধ্যে তাদের কাজ করতে হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সংঘাত ও অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত একটি দেশে এই ঘটনা ঘটল।
এক্স-এ (সাবেক টুইটার) প্রকাশিত এক পোস্টে সিরিয়ার জরুরি অবস্থা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী রায়েদ আল-সালেহ বলেছেন, তুর্কি, জর্ডান, লেবানিজ, কাতারি ও ইরাকি দলের সহায়তায় দমকলকর্মীরা ‘সব দিক থেকে আগুনের বিস্তার বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে, যা দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
সালেহ বলেন, ‘গত ১০ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে ভালো।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাতাসের কারণে এখনও হুমকি আছে, তবে আমরা আগুন নতুন করে ছড়ানো ঠেকানোর জন্য কাজ করছি।’

বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, উদ্ধারকারী দলগুলো ‘বনের মধ্যে রাস্তা তৈরি করছে ও আগুন নেভানোর কাজ চালাচ্ছে... যাতে আগুন লাগার সম্ভাবনা কমানো যায়।’ কর্তৃপক্ষ কোনো হতাহতের খবর দেয়নি, তবে সতর্কতা হিসেবে লাতাকিয়া প্রদেশের বেশ কয়েকটি শহর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতির প্রায় সাত মাস পরও সিরিয়া এখনও এক দশকের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই যুদ্ধ দেশের অর্থনীতি, অবকাঠামো ও জনসেবাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
মানুষের কারণে হওয়া জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী খরা দাবানলের তীব্রতা বাড়িয়েছে। সিরিয়াও তীব্র তাপপ্রবাহ ও কম বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত জুন মাসে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এএফপিকে বলেছিল, সিরিয়া ‘৬০ বছরে এত খারাপ জলবায়ু পরিস্থিতি দেখেনি।’