লন্ডন সফরে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের দাবি

ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগের যুক্তরাজ্য সফরে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে। লন্ডনে তার সফরের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি বিভিন্ন সংগঠন, মানবাধিকার কর্মী ও রাজনীতিবিদরা বিক্ষোভ করছেন। হার্জোগ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা রয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার কেন্দ্র (আইসিজেপি) স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে চিঠি লিখে হার্জোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, নির্যাতন ও গণহত্যার অভিযোগে তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
একই দাবিতে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক এনজিও ফ্রেন্ডস অফ আল-আকসাও পাবলিক প্রসিকিউশন ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আবেদন করেছে। তারা অবিলম্বে হার্জোগের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও অনুরোধ করেছে।
ফ্রেন্ডস অফ আল-আকসার চেয়ারম্যান ইসমাইল প্যাটেল বলেন, ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করতে ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন আদালতের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ রয়েছে।
হার্জোগের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ইসরায়েল গাজা, সিরিয়া, লেবানন ও কাতারে হামলা চালাচ্ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৬৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
স্কটিশ দৈনিক দ্য ন্যাশনালের প্রথম পৃষ্ঠায় এই সফরের তীব্র সমালোচনা করে শিরোনাম করা হয়েছে : ‘গণহত্যার জন্য স্টারমার লাল গালিচা বিছিয়েছেন’।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর প্রধান সাশা দেশমুখ বলেন, হার্জোগ তার পদটিকে ‘সম্মিলিত শাস্তি রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করছেন’। এই সফর প্রমাণ করবে যে, যুক্তরাজ্য গণহত্যার বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে, নাকি এটিকে উপেক্ষা করতে সাহায্য করেছে।
গ্রিন পার্টির নেতা জ্যাক পোলানস্কি ও লেবার পার্টির অনেক জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদও হার্জোগকে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, হার্জোগকে আটকে রাখতে অস্বীকার করা জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন হতে পারে।

২০২১ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে থাকা হার্জোগ তার কিছু মন্তব্যের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর তিনি বলেছিলেন, ‘‘পুরো ফিলিস্তিনি জাতি দায়ী... ‘হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের সম্পর্কে অবগত নয়’, জড়িত নয় এই বক্তব্য সত্য নয়’’। এর দুই মাস পর তিনি গাজার জন্য নির্ধারিত একটি আর্টিলারি শেলে স্বাক্ষর করেন।
সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, অর্ধেকেরও বেশি ব্রিটিশ নাগরিক মনে করেন, গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড অন্যায্য। এই সফরের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ চলমান থাকায় বোঝা যাচ্ছে, সরকারের এই সিদ্ধান্ত জনমতের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীত।