প্রতিবেশী দেশগুলোতে কী ঘটছে দেখুন : ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দেশটির রাষ্ট্রপতির রেফারেন্স সম্পর্কিত একটি রায়ের শুনানিতে নেপাল ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে গত ১২ এপ্রিল দেওয়া আদালতের একটি আদেশের ওপর রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের শুনানির সময় চলতি সপ্তাহে নেপালে এবং গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আন্দোলনের কথা উল্লেখ করা হয়। খবর এনডিটিভির।
খবরে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের ওই আদেশে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও রাজ্যপালদের রাজ্যগুলোর বিল অনুমোদনের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।
ভারতীয় সংবিধানের কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই বলেন, ‘আমরা আমাদের সংবিধানের জন্য গর্বিত। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে কী ঘটছে তা দেখুন। নেপাল, আমরা দেখেছি।’ নেপালে এই সপ্তাহের সহিংস আন্দোলনে ২১ জন নিহত হয়েছেন।
এ সময় ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আরেক বিচারপতি বিক্রম নাথ বলেন, ‘হ্যাঁ, বাংলাদেশেও...।’
ভারতের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিল আটকে বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজ্যপালদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরার পর বুধবার সুপ্রিম কোর্ট এসব মন্তব্য করেন। বেঞ্চ যখন তার যুক্তি বিবেচনা করছিলেন, তখন বিচারপতি বিক্রম নাথ বলেন—কতগুলো বিল পাস হয়েছে বা আটকে রাখা হয়েছে, তা বিবেচনা না করেই দেশ গত ৭৫ বছর ধরে কাজ করছে। এ সময় তুষার মেহতা বলেন, তার কাছে এমন তথ্য আছে, যা এ ধরনের ঘটনার বিরল বলে প্রমাণিত হয়।
এ সময় প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘আমরা এই পরিসংখ্যান নিতে পারি না। এটা ন্যায্য হবে না।’
এরপর সলিসিটর জেনারেল বলেন, রাজ্য সরকার কর্তৃক পাস হওয়া বিলের ৯০ শতাংশই এক মাসের মধ্যে রাজ্যপাল কর্তৃক অনুমোদিত হয়। ১৯৭০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মাত্র ২০টি বিল রাজ্যপাল বিলম্বিত করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে রাজ্যপাল আরএন রবির আটকে রাখা তামিলনাড়ু সরকার কর্তৃক পাস হওয়া সাতটি বিল।

গত এপ্রিলে তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল ডিএমকে’র মামলার আদেশে আদালত আরএন রবির এই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করেছিলেন। আদালত বলেন, রাজ্যসভায় পাস হওয়া বিলগুলোকে ৩০ দিনের মধ্যে রাজ্যপাল অথবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদন হতে হবে।
পরে ভারতের সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতি সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন। সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে জনগুরুত্বপূর্ণ আইনের যেকোনো প্রশ্নে আদালতের মতামত চাওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।