শুল্ক কমিয়ে আনার প্রস্তাব ভারতের, ট্রাম্প বললেন ‘দেরি হয়ে গেছে’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক একটি ‘একতরফা বিপর্যয়’। তিনি দাবি করেন, ভারত এখন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু এখন তা দেরি হয়ে গেছে। পাশাপাশি ভারতের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব ‘কিছুই না’ বলে তার মতামত তুলে ধরেছেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য এলো।
ট্রাম্প আবারও রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, এটি শুল্ক আরোপের অন্যতম প্রধান কারণ। বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে আলোচনা স্থগিত আছে, সে বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
মোদি চীন থেকে দেশে ফিরে আসার কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বলেন, ‘খুব কম লোকই বোঝে যে আমরা ভারতের সঙ্গে খুব কম ব্যবসা করি, কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ব্যবসা করে… কারণ হলো ভারত এখন পর্যন্ত আমাদের ওপর এত বেশি শুল্ক আরোপ করেছে… যে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতে পণ্য বিক্রি করতে অক্ষম। এটি সম্পূর্ণ একতরফা বিপর্যয়!’
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭.৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল, যেখানে তারা মার্কিন পণ্য আমদানি করেছিল ৪১.৫ বিলিয়ন ডলারের। এর ফলে ভারতের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৪৫.৮ বিলিয়ন ডলার। তবে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে, ভারতে মার্কিন রপ্তানি ছিল ২২.১ বিলিয়ন ডলার, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রপ্তানি ছিল ৫৬.৩ বিলিয়ন ডলার।
ট্রাম্প তার পোস্টে আরও বলেন, ভারত ‘তার বেশিরভাগ তেল ও সামরিক পণ্য রাশিয়া থেকে কেনে, খুব কমই কেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে’।
ট্রাম্পের এই ক্ষোভের প্রধান কারণ হলো— দুই দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি। এছাড়াও, মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে তার কোনো ভূমিকা ছিল না বলে ভারতের দাবিও তাকে বিরক্ত করেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বর্তমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রয়েছে। এই শুল্কের ফলে টেক্সটাইল, রত্ন ও গহনা, চামড়াজাত পণ্য ও চিংড়ির মতো শ্রম-নিবিড় শিল্পগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই শুল্কের কারণে ২০২৬ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৮৭ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসতে পারে, যা ভারতের জিডিপিতে প্রায় ১ শতাংশ প্রভাব ফেলবে ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।