গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতার জন্য কাতারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মধ্যস্থতা করার জন্য কাতারে পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি মন্তব্য করেছেন, এই সংঘাতের অবসানে কাতারই একমাত্র দেশ যারা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে। ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান শুরু করার পরপরই তিনি সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে খুব অল্প সময় বাকি আছে।
রুবিও তেল আবিব ত্যাগ করার পরপরই ইসরায়েল মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গাজা শহর দখলের জন্য স্থল অভিযান শুরু করার ঘোষণা দেয়। এর এক সপ্তাহ আগে কাতারের রাজধানীতে হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলের হামলার ঘটনা ঘটে, আন্তর্জাতিকভাবে যার জন্য নিন্দা জানানো হয়েছে।
দোহায় যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের রুবিও বলেন, ইসরায়েলি হামলার পর আলোচনায় ‘গঠনমূলক ভূমিকা’ পালন অব্যাহত রাখার জন্য তিনি কাতারকে আহ্বান জানাবেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই গত সপ্তাহের ঘটনার পর তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা এটা করতে চায় কিনা, কিন্তু আমরা তাদের জানাতে চাই যে, বিশ্বে যদি এমন কোনো দেশ থাকে যারা আলোচনার মাধ্যমে এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে সাহায্য করতে পারে, তবে তা হলো— কাতার।
তবে রুবিও সতর্ক করে দিয়ে বলেন, গাজা শহরে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ তীব্রতর হওয়ায় এখন আর মাস বা কয়েক সপ্তাহ নয়, বরং মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে একটি চুক্তি হওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রথম পছন্দ হলো এটি একটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা, যেখানে হামাস বলবে, ‘আমরা সামরিকীকরণ করতে যাচ্ছি না।’ তবে তিনি তার পূর্বের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির ‘অস্তিত্ব বন্ধ করা’ প্রয়োজন।
কাতারে পৌঁছে রুবিও দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে আলোচনা করেন। এই সফরে আমেরিকা ও কাতার একটি বর্ধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি চূড়ান্ত করার কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং কাতার-আমেরিকার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কৌশলগত, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা স্তরে। আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে ও যে কোনো আক্রমণের পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
রুবিওর এই সফর এমন এক সময় হচ্ছে যখন আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতারা ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে সংহতি প্রকাশ করে একটি যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা থেকে বিরত রাখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর একদিন পর মঙ্গলবার ভোরে পুরো গাজা উপত্যকায় নতুন করে হামলা শুরু হয়।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, ‘‘গাজা শহরের কেন্দ্রস্থল ‘আগুনে জ্বলছে’। আমরা পিছু হটব না, মিশন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা পিছু হটব না।’’
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে গাজা জুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।