বিদেশে অবস্থানরত হামাস নেতাদের ওপর হামলার ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর

কাতারে সাম্প্রতিক হামলার পর বিদেশে অবস্থানরত হামাস নেতাদের ওপর আরও হামলার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেননি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন, কোনো ধরনের ‘অভয়ারণ্য’ পাবেন না। খবর বিবিসির।
জেরুজালেমে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, প্রতিটি রাষ্ট্রেরই সীমানার বাইরেও আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলার ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। হামাস দাবি করেছে, এ হামলায় ছয়জন নিহত হলেও তাদের শীর্ষ নেতারা বেঁচে গেছেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারকে আশ্বস্ত করেছেন যে এমন ঘটনা আর হবে না। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দেন, “আমরাই এ হামলা চালিয়েছি, আর কেউ নয়।”
এ সময় রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় মিত্রদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। যদিও কাতারের প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্বিচারিতা পরিহার করে ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি তুলেছেন।

এদিকে, গাজা সিটিতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বসতবাড়ি ধ্বংসের পর এখন স্থল অভিযানের প্রস্তুতির খবর স্থানীয় গণমাধ্যমে এসেছে। ইসরায়েলি সেনারা গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের দক্ষিণে যেতে বললেও অনেকে অর্থাভাব বা নিরাপত্তাহীনতার কারণে যেতে পারছেন না। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, দুর্ভিক্ষকবলিত এলাকায় অভিযান জোরদার হলে বেসামরিক মানুষের মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হবে।
নেতানিয়াহু-রুবিও বৈঠকটি এমন সময়ে হচ্ছে যখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আগামী সপ্তাহে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেমের কাছে বিতর্কিত ই-ওয়ান বসতি প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। নেতানিয়াহু বলেছেন, “কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না, এ ভূমি আমাদের।”
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর থেকে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে প্রায় ১৬০টি বসতি স্থাপন করেছে, যেখানে প্রায় সাত লাখ ইহুদি বাস করে। এর পাশাপাশি সেখানে বসবাস করছে সাড়ে ৩৩ লাখ ফিলিস্তিনি। আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ বলে বিবেচিত।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রুবিও পূর্ব জেরুজালেমের বিতর্কিত সিলওয়ান এলাকায় সিটি অব ডেভিড প্রত্নতাত্ত্বিক পার্ক পরিদর্শন করেন। এখানে একটি নতুন ‘পিলগ্রিমেজ রোড’ উদ্বোধন করা হয়, যা ফিলিস্তিনি বাড়িঘরের নিচ দিয়ে খনন করা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রত্নতত্ত্বকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ক্ষতির কারণ হচ্ছে।