গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান নির্বাহী সংস্থা ইউরোপীয় কমিশন ইসরায়েলের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন চুক্তির কিছু বাণিজ্য সম্পর্কিত বিধান স্থগিত করার প্রস্তাব পেশ করেছে। খবর আল জাজিরার। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত এই প্রস্তাবে ‘চরমপন্থি’ ইসরায়েলি মন্ত্রী ও সহিংস বসতি স্থাপনকারীদের পাশাপাশি হামাসের ওপরও নিষেধাজ্ঞার কথা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইইউর পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা কাল্লাস সদস্য দেশগুলোকে কিছু ইসরায়েলি পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি ও ১০ জন হামাস নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে, তিনি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার দুই অতি-ডানপন্থী সদস্য ইতামার বেন-গভির (জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী) ও বেজালেল স্মোট্রিচের (অর্থমন্ত্রী) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও আহ্বান জানান।

কমিশন আরও জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের নাগরিক সমাজ ও ওয়ার্ল্ড হলোকাস্ট রিমেম্বরেন্স সেন্টার ইয়াদ ভাশেমকে সমর্থন ব্যতীত ইসরায়েলের প্রতি দ্বিপাক্ষিক সমর্থন স্থগিত করছে।

ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন বলেন, গাজায় প্রতিদিন ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনাগুলো বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, সমস্ত মানবিক সহায়তার জন্য অবাধ প্রবেশাধিকার ও হামাস কর্তৃক আটক সমস্ত জিম্মিদের মুক্তি প্রয়োজন।

ভন ডের লেইন আরও যোগ করেন, আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য ছাড় স্থগিত করার, চরমপন্থি মন্ত্রী ও সহিংস বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রস্তাব করছি। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের নাগরিক সমাজ বা ইয়াদ ভাশেমের সঙ্গে আমাদের কাজকে প্রভাবিত না করে ইসরায়েলকে দ্বিপাক্ষিক সহায়তা স্থগিত রাখারও প্রস্তাব করছি।

কমিশন তাদের প্রস্তাবে বলেছে, ইসরায়েলি সরকারের পদক্ষেপ মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি শ্রদ্ধা সম্পর্কিত অপরিহার্য উপাদানগুলোর লঙ্ঘন করেছে, যা অ্যাসোসিয়েশন চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ এর পরিপন্থি। এই লঙ্ঘন গাজায় দ্রুত অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতি, মানবিক সহায়তা অবরোধ ও পশ্চিম তীরের বসতি স্থাপন পরিকল্পনাকে নির্দেশ করে, যা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে দুর্বল করে।

এদিকে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের মতো কিছু সদস্য রাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানালেও, জার্মানি ও হাঙ্গেরিসহ অন্যরা ইসরায়েলি সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভকারীরা গাজার যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের দাবি জানালেও, ইইউ এখনো পর্যন্ত একটি ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে।