প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে মাদাগাস্কারে বিক্ষোভ চলছেই

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা যুব-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের পর মাদাগাস্কারে সরকারবিরোধীরা বুধবার (১ অক্টোবর) নতুন করে বিক্ষোভ ও সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের প্রধান লক্ষ্য প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে রাজোয়েলিনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা। খবর এএফপির।
বুধবার উত্তরাঞ্চলীয় শহর আন্তসিরানানায় হাজার হাজার লোকের সমাবেশ থেকে সরাসরি প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে রাজধানী আন্তানানারিভোর কেন্দ্রস্থলে প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভ হয়। অন্যান্য শহরেও তা ছড়িয়ে পড়ে।
অস্থিরতা দমনের লক্ষ্যে রাজোয়েলিনা সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তাঁর সরকারকে বরখাস্ত করলেও বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-পীড়নের ফলে কমপক্ষে ২২ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

তবে, সরকার এই হতাহতের সংখ্যাকে যাচাই না করা ও ‘গুজব বা ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মধ্য আন্তানানারিভোতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ বিক্ষোভ করে ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী ‘জেন জেড’ (জেন-জি) আন্দোলনের একজন মুখপাত্র মঙ্গলবার এএফপিকে বলেন, ‘সরকারের বরখাস্ত আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়।’ আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়াসহ সিনেট, সাংবিধানিক আদালত এবং নির্বাচন কমিশন ভেঙে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
আন্দোলনকারীরা আরও দাবি করেছে, প্রেসিডেন্টের প্রধান আর্থিক সমর্থক ব্যবসায়ী মামি রাভাতোমাঙ্গাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তারা অভিযোগ করেছেন যে, রাজোয়েলিনা ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও ‘মালাগাসি জনগণের জীবনযাত্রার অবস্থা প্রতিদিন অবনতি হচ্ছে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জেন জি’ আন্দোলনকারীরা সরকারি খাতের ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সাধারণ ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
পোপ লিও চতুর্দশ বুধবার (১ অক্টোবর) বলেছেন, তিনি ‘মাদাগাস্কার থেকে আসা খবরে দুঃখিত’। তিনি সেখানে ‘ন্যায়বিচার ও সাধারণ কল্যাণের প্রচার’ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতার পর থেকে মাদাগাস্কার একাধিক রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। ৫৬ বছর বয়সী রাজোয়েলিনা ২০০৯ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রথম ক্ষমতায় আসেন ও ২০২৩ সালে বিরোধী দল বর্জন করা নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হন। দেশটি বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটি হলেও ভ্যানিলার শীর্ষস্থানীয় উৎপাদনকারী এবং কৃষি, বন, মাছ ধরা ও বিভিন্ন খনিজ পদার্থের প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ।