এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ‘গণধর্ষণ’ : আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
সিলেট মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে তরুণী গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সিলেটে বিক্ষোভ করছে বিভিন্ন সংগঠন। বিক্ষোভ দেখা গেছে এমসি কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায়ও। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সিলেট-তামাবিল সড়ক আধা ঘণ্টা টায়ার জ্বালিয়ে বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন।
পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। অন্যদিকে, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সালেহ আহমদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার পর আজ শনিবার দুপুরে এমসি কলেজে জরুরি বৈঠকে বসে প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ঘটনার বিষয়ে যা যা করণীয়, সবকিছু করবেন তাঁরা।
এরই মধ্যে এ ঘটনায় নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ওই তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে আজ সকালে মামলাটি করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) শাহ পরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাইয়ুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন এম সাইফুর রহমান (২৮), শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), তারেক (২৮), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান মাছুম (২৫)। তাঁদের মধ্যে সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে, তারেক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় ও মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়।
অভিযোগ উঠেছে, মামলার এই ছয় আসামি ছাত্রলীগের কর্মী। এ বিষয়ে ওসি আবদুল কাইয়ুম জানান, মামলায় ছয়জনকে সরাসরি জড়িত বলে আসামি করা হয়েছে। তবে মামলার এজাহারে তাঁদের ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আসামিদের ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
অভিযান চলাকালে মামলার আসামি এম সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাইফুরের কক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি রামদা, একটি ছোরা ও জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে গতকাল সন্ধ্যায় এমসি কলেজে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পাঁচ থেকে ছয়জন তাঁদের জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণ করে তারা। বর্তমানে ওই তরুণী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন।
ওসি কাইয়ুম চৌধুরী জানান, ওই দম্পতি কী জন্য ছাত্রাবাসে ঢুকেছিলেন, সেটি জানার চেষ্টা চলছে। তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এমসি কলেজের হোস্টেল সুপার জামাল উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি কারা স্বামী-স্ত্রীকে হোস্টেলে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।’