খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের অনশন তিন দিনের জন্য স্থগিত

মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে শ্রমিকদের আমরণ অনশন তিন দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে খুলনার বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে কয়েক দফা শ্রমিক নেতাদের মতবিনিময়ে এই সিদ্ধান্ত হয়।
এ সময় শ্রমিক নেতারা আমরণ অনশন স্থগিত ঘোষণায় সম্মত হলেও সাধারণ শ্রমিকরা তা মানতে রাজি হননি। রাত ১২টা থেকে দফায় দফায় শ্রমিক নেতাদের বারবার আহ্বান জানানোর পর রাত ২টার দিকে সাধারণ শ্রমিকরা সম্মত হয়ে বিএডিসি রোড ত্যাগ করে মিলে আবাসিক এলাকায় ফিরে যায়।
সাধারণ পাটকল শ্রমিকরা মূলত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের জন্য অনশন ধর্মঘট স্থগিত রাখার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। এই তিন দিনের মধ্যে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবার আমরণ অনশনে বসবেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকনেতা, স্থানীয় প্রশাসন ও যুগ্ম শ্রম পরিচলকের সঙ্গে বৈঠককালে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান শ্রমিক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই পাটকল এবং শ্রমিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনার বন্ধ হওয়া পাটকলগুলো চালু হয়েছে। এ সরকারের আমলে মজুরি কমিশন ২০১৫ পাস হয়েছে এবং এ সরকারই তা বাস্তবায়ন করবে।
প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের বলেন, দাবি-দাওয়া পূরণ করতে একটি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ প্রেক্ষাপট তৈরি করা দরকার। তাই শ্রমিকদের স্বার্থে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করবেন।
প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক নেত্রী সাহানা শারমিন বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের সভায় দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারো অনশন পালন করা হবে।
এদিকে অনশন কর্মসূচির চতুর্থ দিন গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত অসুস্থ এক শ্রমিকের মৃত্যু এবং দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এ ছাড়াও অনশনস্থলে শতাধিক শ্রমিককে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছিল।
১১ দফা দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছিলেন শ্রমিকরা।