বৌভাত শেষে ফেরার পথে পদ্মায় নৌকাডুবি, কনেসহ নিখোঁজ ২০

বর ও কনেসহ প্রায় ৩৫ যাত্রী নিয়ে রাজশাহীর পদ্মায় দুটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। পদ্মার ওপাড়ে বরের বাড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে বর-কনেকে নিয়ে কনের বাড়ির লোকজন বাড়ি ফেরার পথে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর বর রুমন আলীসহ ১২ জন জীবিত এবং মরিয়ম নামে ছয় বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কনে সুইটি বেগমসহ এখনও ২০ থেকে ২২ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেছে উদ্ধার হওয়া স্বজনরা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে জীবিত উদ্ধার হওয়া ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনকে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীনরা জানান, বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে বরের বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে ফেরার পথে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
বরের নাম রুমন আলী (২৬)। তাঁর বাড়ি পদ্মার ওপারে পবা উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামে। বাবার নাম ইনসার আলী। আর কনের নাম সুইটি বেগম (২০)। তাঁর বাড়ি পদ্মার এপাড়ে রাজশাহী শহর সংলগ্ন পবা উপজেলার ডাঙেরহাট গ্রামে। তাঁর বাবার নাম শাহীন আলী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রুমন-সুইটির বিয়ে হয়। আজ দুপুরের দিকে সুইটির আত্মীয়-স্বজনরা বর-কনেকে আনতে যায়। ফেরার পথে পদ্মায় নৌকা ডুবে যায়।
ঘটনার পর বর জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়া দুই পরিবারের পাঁচজনসহ ১২ জন উদ্ধার হয়েছে। এদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে খাদিমুল ইসলাম (২৩), রতন আলীর স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন (২২), সুমন আলী (২৮) ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন বেগম (২২) ও মেয়ে সুমনা আক্তারকে (৬)।
এদের মধ্যে খাদিমুল নৌকার মাঝি ছিলেন। বৃষ্টি খাতুন জীবিত উদ্ধার হলেও তাঁর মেয়ে মরিয়ম খাতুন (৬) মারা গেছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মায়ের সঙ্গে তাকে উদ্ধার করা হয়। আর মেয়েকে নিয়ে সাঁতরে উঠেছিলেন সুমন-নাসরিন দম্পতি। বৃষ্টি খাতুন জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী রতনের সাঁতার জানেন না। তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নৌকাডুবির পর আশপাশের অসংখ্য মানুষ এবং স্বজনরা শ্রীরামপুর এলাকায় নদীপাড়ে ভিড় করে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও স্পিডবোট নিয়ে নদীতে ভাসমান মানুষ খুঁজছে। নদীপাড়ে প্রস্তুত রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স।
শ্রীরামপুর এলাকার এক নারী জানান, দুপুরে তিনি অন্তত ৩৫ জনকে চরে যাওয়ার জন্য নদীর দিকে যেতে দেখেছেন। তাদের সঙ্গে ৭-৮ জন শিশুও ছিলো। তারা দুটি নৌকায় চড়ে চরে গিয়েছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, দুটি নৌকায় ৩৫ জনের মতো যাত্রী ছিল। এর মধ্যে ১৭ জন নারী ও ছয়জন শিশু। সন্ধ্যায় দুই নৌকা ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। কতজন নিখোঁজ রয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।