সুটকেসবন্দি গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার, স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গঙ্গাশ্রম এলাকা থেকে উদ্ধার করা সুটকেসবন্দি নারীর হত্যারহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে শহরের তৈমুর এক্সেল টাওয়ার থেকে স্বামী ও স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. জাকির হোসেন সোহাগ (৪৪) ও তাঁর স্ত্রী জেসমিন জেসি (৩০)।
নিহত গৃহকর্মীর নাম সাবিনা (২০)। তিনি সদর উপজেলার উজান বাড়েরা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সিরুর মেয়ে বলে জানা গেছে।
জেলা পিবিআই কার্যালয়ে পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস আজ শুক্রবার দুপুরে সাংবাদ সম্মেলনে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর গৌরীপুর উপজেলার গঙ্গাশ্রম এলাকায় জোড়া ব্রিজের নিচে পরিচয়হীন সুটকেসবন্দি এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে সুমন রাজবর নামে এক চৌকিদার বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ১৫ নভেম্বর মামলাটি হাতে নেয় ময়মনসিংহ জেলা পিবিআই। মামলাটি তদন্ত করেন পিবিআই পরিদর্শক আবুল কাশেম। এ সময় পুলিশের জব্দকৃত আলামত পরীক্ষা করতে গিয়ে একটি ‘আইডেন্টিটি মার্ক’ শনাক্ত করে পিবিআই।
এরপর ২৭ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে শহরের বাড়েরা এলাকা থেকে সোহাগ ও তাঁর স্ত্রী জেসমিন জেসিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে হত্যার দায় স্বীকার করে তারা।
পিবিআই পুলিশ সুপার আরো জানান, ২০১৭ সালে দারিদ্র্যতার কারণে মেয়ে সাবিনাকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার সোহাগের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে রাখেন। কিন্তু সামান্য ভুল হলেই সাবিনাকে নির্যাতন করতেন গৃহকর্ত্রী জেসি। এর এক পর্যায়ে ৮ নভেম্বর স্বামী-স্ত্রীর নির্যাতনে মারা যান সাবিনা। পরে স্বামী স্ত্রী মিলে সাবিনার মৃতদেহ লুকানোর পরিকল্পনা করেন। সেদিন সন্ধ্যায় বস্তায় মরদেহ এবং ইট ভরে সুটকেসে ভরেন। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে সাবিনার মরদেহ গাড়িতে নিয়ে গঙ্গাশ্রম এলাকার জোড়া ব্রিজের নিচে পানিতে ফেলে দিয়ে আসেন। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
গতকাল আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।