কুমিরছানা বধের অভিযোগে চিতা বিড়ালকে গুলি করে হত্যা!

সুন্দরবনে একটি চিতা বিড়ালকে গুলি করে হত্যা করল বন বিভাগ! কর্মকর্তাদের দাবি, করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রে ১৯টি কুমিরের ছানাকে ওই চিতা বিড়ালটি হত্যা করেছে।
গতকাল রোববার ওই প্রজননকেন্দ্রে ১৯টি কুমিরের ছানাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বন বিভাগের কর্মকর্তারা এসব কুমিরের ছানার খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করেন।
এদিকে গত ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি করমজল কুমির প্রজননকেন্দ্র থেকে মোট ৪৩টি কুমিরের ছানা হারিয়ে যায়। ওই সব ছানার কোনো খোঁজ এখনো পায়নি বন বিভাগ।
হত্যার পর চিতা বিড়ালটির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. মেহেদীজ্জামান।
তবে কুমিরের ছানা নিখোঁজ নিয়ে মেহেদীজ্জামানের বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে দুই দফায় ৪৩টি কুমিরের ছানা নিখোঁজের বিষয়ে তিনি একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দেন। প্রথমে তিনি দাবি করেন, কুমিরের ছানাগুলো একটি চক্র চুরি করে অন্যত্র পাচার করে দিয়েছে। যদি কোনো প্রাণী এগুলো মেরে ফেলত কিংবা খেতো তাহলে সেখানে রক্ত, হাড়, মাংসসহ বিভিন্ন আলামত থাকত। সেগুলোর কোনো কিছুই সেখানে পাওয়া যায়নি।
এরপর দ্বিতীয় দফায় মেহেদীজ্জামান বলেন, কুমিরের ছানাগুলো করমজল কুমির প্রজননকেন্দ্রের কর্মচারী জাকির ও মাহাবুব নাশকতামূলকভাবে হত্যা করেছেন। কারণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমানের সঙ্গে ওই দুই কর্মচারীর সম্পর্ক ভালো ছিল না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফাঁসানোর জন্য কিংবা বেকায়দায় ফেলার জন্য তাঁরা পরিকল্পিতভাবে ছানাগুলো হত্যা করেছেন।
এরপর তৃতীয় দফায় মেহেদীজ্জামান জানান, কুমিরের ছানাগুলো চিতা বিড়ালের আক্রমণে মারা গেছে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের ছানাগুলো জাকির ও মাহাবুব হত্যা করেছেন বলে তিনি তাঁর তদন্তে নিশ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করেন।
মো. মেহেদীজ্জামান কুমিরের ছানা নিখোঁজ ও মারা যাওয়ার ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান। গতকাল রোববার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি আরো তদন্তের জন্য এক সপ্তাহ সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন বলে জানান।
এদিকে কুমির প্রজননকেন্দ্রে বন বিভাগের নজরদারি আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। কুমির ছানা সংরক্ষণের জন্য ছোট ছোট কৃত্রিম পুকুরগুলোর ভেতরের চারপাশে বসানো হয়েছে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। এ ছাড়া জাল দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পুকুরের বাইরের অংশ।