অব্যবস্থাপনায় ধুঁকছে করমজল, পর্যটক হারানোর শঙ্কা

সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রের অবস্থা ভালো নেই। নানা অব্যবস্থাপনার কারণে দুর্ভোগে পড়ছেন পর্যটকরা। অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে পর্যটকদের কাছে টানতে পারছে না করমজল। পর্যটক হারালে সুন্দরবন বিপুল রাজস্বও হারাবে বলে সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা।
করমজল কেন্দ্রে থাকা হাঁটার দুটি ‘ফুট ট্রেইলার’ দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গা অবস্থায় আছে। সেখানে প্রতিনিয়ত দুঘর্টনার শিকার হচ্ছে শিশু-নারীসহ বয়স্ক মানুষ। কাঠের তৈরি সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ারে নিচের অংশ ভাঙা থাকায় কেউই উপরে যেতে পারছেন না। আর ওয়াচ টাওয়ার থেকে দেখতে পারছেন না সুন্দরবনের দৃশ্য।
প্রতিদিন করমজলে আসা বিপুল দর্শানার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র দুটি টয়লেট। যা পর্যাপ্ত নয়। নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। দীর্ঘদিনে গড়ে ওঠেনি কোনো খাবার ক্যান্টিন। ফলে এখানে আগত পর্যটকদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ কেন্দ্র থেকে প্রতি বছর যে রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে তা দিয়ে কেন্দ্রের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে পর্যটকদের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়বে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
মোংলার পর্যটন ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, ‘করমজলকে আরো আধুনিক করা হলে এখন যে পরিমাণ পর্যটক আসে এর চেয়ে আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এখন করমজলের যে অবস্থা তাতে পর্যটকরা এখানে একবার এলে পরবর্তী সময়ে আসার আগ্রহ থাকে না। ফুট ট্রেইলার ও টাওয়ার মেরামত না করায় পর্যটকদের দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। এমন অবস্থা হাড়বাড়িয়াতেও। দীর্ঘদিনেও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আধুনিক ও নতুন নতুন দৃষ্টিনন্দন কোনো অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি।’
পর্যটন ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজনের ধারণা পর্যটন কেন্দ্রগুলো টয়লেট, সুপেয় পানি, খাবার ক্যান্টিন, বিশ্রামাগারের ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। এসব ভেবে তারা সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে থাকে। কিন্তু সেখানে যেয়ে যখন দেখে এসবের কোনো কিছুই নেই তখন তাদের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়। আগ্রহ হারিয়ে ফেলে সুন্দরবনে আসার। তাই এসব বিষয়ে বন বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। কারণ এ পর্যটন শিল্প দিয়ে বন বিভাগ প্রতি বছর বিপুল রাজস্ব আদায় করে থাকে। আর আমরা ব্যবসায়ীরা এর সঙ্গে জড়িত। পর্যটকদের ভালো সেবা দিতে না পারলে উভয়েরই ক্ষতি।’
এ বিষয়ে করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘ফুট ট্রেইলারটা নষ্ট হয়ে গেছে, এটা এখন ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বার বার জানানো হয়েছে। শিগগিরই এগুলো মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে এখানে কুমির ও হরিণের পাশাপাশি নতুন করে বৈচিত্র্য আনা হলে পর্যটকদের আরো বেশি আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।’